পথের কি শেষ আছে? তা হয়ত অনেকেরই অজানা। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আকাশ যেখানে মিশেছে সেখানেই কি শেষ পৃথিবীর রাস্তা? পৃথিবীতেই সেই রাস্তা আছে, যা শেষ হয়ে গেছে। রাস্তা মিশে গেছে অসীমে। ভূ-বিজ্ঞানীরা দিলেন সেই রাস্তার সন্ধান।
পৃথিবীর সেই শেষ রাস্তার ঠিকানা হলো ইউরোপের ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’। এই রাস্তা অবস্থিত নরওয়েতে। ঠিকানা যখন রয়েছে পৃথিবীর শেষ রাস্তার তখন অ্যাডভেঞ্চারের সাক্ষী হতে নিশ্চয়ই একবার যেতে মন কাঁদবে অনেকেরই। নরওয়ের ওই ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’তে পৃথিবীর শেষ রাস্তা দিয়ে অন্তত একবার হাঁটার শখ অনেকেরই।
পৃথিবীর এই শেষ রাস্তাটি উত্তর গোলার্ধে অর্থাৎ নিরক্ষরেখার ঠিক উপরের দিকে। রাস্তাটিকে কেন পৃথিবীর শেষ রাস্তা বলা হয়, তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন ভূ-বিজ্ঞানীরা। সেখানে কি কেউ যেতে পারেন, কীভাবে যাওয়া সম্ভব সেখানে, তাও ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। নরওয়ের ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’ উত্তর মেরুর গা ঘেঁষে চলে গেছে। এই রাস্তা উত্তর ইউরোপের নর্ডক্যাপকে সংযুক্ত করেছে নরওয়ের ওল্ডাফিউওর্ড গ্রামের সঙ্গে।
এই ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’র দূরত্ব ১২৯ কিলোমিটার। পাঁচটি ট্যানেল পার হয়ে ওই রাস্তা অতিক্রম করতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে যে লম্বা ট্যানেলটি রয়েছে তা হলো ‘নর্থ কেপ’। ওই ‘নর্থ কেপ’ ৬.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। ‘নর্থ কেপ’ ট্যানেলটি গিয়ে পৌঁছায় সমুদ্রতলের ২১২ মিটার নিচে। সেখানেই শেষ রাস্তা।
ওই রাস্তায় যাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম না মানলে ওই রাস্তায় যাওয়ার অনুমতি মিলবে না, নিয়ম না মানলে ভয়ংকর বিপদ লুকিয়ে রয়েছে ওই রাস্তার পরতে পরতে। তাই ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’তে একা যাওয়ার কোনো অনুমতি নেই। ভয়ানক গতিতে বাতাস বইতে থাকে। আর তেমনই ঠান্ডা।
এতটাই ঠান্ডা যে গ্রীষ্মকালেও এখানে বরফ পড়ে। আর শীতকালে এই রাস্তা তুষারে ঢাকা থাকে। বন্ধ থাকে রাস্তা। অতিরিক্ত তুষারপাত, বৃষ্টির সঙ্গে যখন তখন সেখানে ঝড় উঠে। আবহাওয়ার কোনো পূর্বাভাসই এখানে কাজ করে না। তবে একটু গরম কালে এই রাস্তায় দল বেঁধে বাইক নিয়ে যাতায়াত করেন অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হয় সেই ছবি। তবে এই রাস্তায় দুর্ঘটনাও ঘটেছে এমন নজির রয়েছে। নরওয়ে সরকার যেমন একটা বিশাল পরিমাণ টাকা আয় করে নর্থার্ন লাইটস দেখিয়ে, তেমনই শেষ কয়েক বছর পৃথিবীর উত্তর প্রান্তের এই দেশের ইউ ৬৯ হাইওয়ে ভ্রমণ পিপাসুদের বাকেট লিস্টে উঠে এসেছে। তবে সঙ্গে গাইড রাখা অবশ্যই উচিত।