অভিনব কায়দায় ট্রাকের সিলিন্ডারের মধ্যে ইয়াবা পাচারকালে এক লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবাসহ চক্রের তিনজনকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩। গতকাল শনিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জব্দ করা হয় ইয়াবা বহন করা ট্রাকটি। ট্রাকের তেলের ট্যাংকিতে বিশেষ কায়দায় এসব ইয়াবা লুকানো ছিল। উদ্ধার করা ইয়াবার দাম ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
আজ রোববার বেলা ১১টায় কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- চট্টগ্রামের মো. আমিনুল ইসলাম ও হেদায়েত এবং বান্দরবানের মো. নুরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, চক্রটি টেকনাফ থেকে ইয়াবা এনে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিত। মূলত ট্রাকের মালিক সোহেলের নেতৃত্বে ৪-৫ বছর ধরে পরিবহন ব্যবসার আড়ালে চক্রটি ইয়াবা পাচার করছিল। চক্রটি পণ্যবাহী পরিবহনের চালক ও সহকারীকে মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের গাড়িতে ইয়াবা ট্যাবলেট পরিবহনের জন্য প্রলুব্ধ করে। ইয়াবা পাচার চক্রের সদস্য সংখ্যা ৭-৮ জন। ট্রাক মালিক সোহেল ও গ্রেপ্তারকৃত আমিনুল টেকনাফের সিন্ডিকেট থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে। ইয়াবা সংগ্রহের পর সোহেলের নির্দেশনায় আমিনুল দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়।
জানা গেছে, চকরিয়ায় একটি গ্যারেজে বিশেষ পদ্ধতিতে গাড়ির তেলের সিলিন্ডারের মধ্যে গোপন প্রকোষ্ঠ তৈরি করে তার মধ্যে ইয়াবা লুকিয়ে পরিবহন করা হয়। এভাবে অভিনব কায়দায় তেলের ট্যাংকিতে ইয়াবা রাখার পর সোহেল, আমিনুল ও নুরুল ইসলাম প্রথমে ট্রাক নিয়ে টেকনাফ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা করে। চট্টগ্রাম আসার পর সোহেল গাড়ি থেকে নেমে যায়। এরপর আমিনুল, নুরুল ইসলাম ও হেদায়েত চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুরের উদ্দেশে রওয়ানা করে। তারা সীতাকুণ্ড ও কুমিল্লায় যাত্রাবিরতি করে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইয়াবার চালানটি তারা গাজীপুরে সরবরাহের উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছিল। তাদের ট্রাকে অন্য কোনো মালামাল ছিল না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন চেকপোস্টে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জানায় মালামাল লোড করে চট্টগ্রাম আনার জন্য তারা খালি ট্রাক নিয়ে গাজীপুর যাচ্ছে। ট্রাকের তেলের ট্যাংকিতে ইয়াবাগুলো লুকিয়ে রাখায় তারা নিশ্চিত ছিল যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশিতে ইয়াবার সন্ধান পাবে না। গ্রেপ্তার ট্রাকচালক নুরুলের গাড়ি চালানোর প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেই। নেই ভারী যানবাহন চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স। মাদকের একটি চালান পৌঁছাতে পারলে সে ৫০ হাজার টাকা করে পেত।
গ্রেপ্তার হেদায়েতেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। সোহেল ও হেদায়েতের উভয়ের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে হওয়ায় এলাকার বন্ধুদের মাধ্যমে তার সোহেলের সাথে পরিচয় হয়। অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের আশায় সে সোহেলের সাথে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে।