জবি প্রতিনিধি : দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সুখবর পেয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়(জবি) শিক্ষার্থীরা। তাদের দীর্ঘদিনের দাবির ভিত্তিতে ৭ আগষ্ট (রোববার) থেকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। সেই সাথে বই নিয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এখন প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। বিষয়টি অফিশিয়ালভাবে ঘোষণা এখনো না আসলেও শিক্ষার্থীদের জন্য এখন থেকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি উন্মুক্ত বলে জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: আইনুল ইসলাম।
ছাত্রকল্যাণ পরিচালক জানান, “এখন থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা নিয়মিত ছাত্র তারা আইডি কার্ড দেখিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে প্রবেশ করতে পারবে, শিক্ষার্থীরা এখন থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সকল বই নিয়ে লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে পারবে তবে ব্যাগ থাকলে তা বাইরে জমা রাখতে হবে। যাদের লাইব্রেরি কার্ড নেই তারা দ্রুত লাইব্রেরি কার্ড করে নিতে পারবে।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারিক জনাব মোঃ এনামুল হক জানান, “শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি এখন থেকে উন্মুক্ত,যারা নিয়মিত ছাত্র তারা লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে প্রবেশ করবে। কিন্তু যাদের লাইব্রেরি কার্ড নেই তাদের করনীয় কি সে ব্যাপারে তিনি জানান, যদি কারো লাইব্রেরি কার্ড না থাকে তাহলে তাকে ২ ঘন্টার ভিতর বিনা খরচে কার্ড তৈরি করে দেয়া হবে। কার্ড তৈরি করতে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি সোমবার ডেস্ক প্রস্তুত থাকবে।”
এর আগে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ফাঁকা পড়ে থাকা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেও টনক নড়েনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন তালবাহানা আর কথা চালাচালি হলেও খুলছিলো না কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। এবং কি বেশ কয়েকদিন যাবৎ বন্ধ করে রাখা হয় উন্মুক্ত লাইব্রেরির কয়েকটি রুম।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত সোমবার (১ আগস্ট) দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) উন্মুক্ত লাইব্রেরি খুলে দেওয়ার দাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড.কামালউদ্দীন আহমদ কথা দিয়েছিলেন, ৪ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) উন্মুক্ত পাঠাগার খুলে দেয়া হবে। সেইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি খুলে দেয়া এবং বই নিয়ে প্রবেশের অনুমতি পেয়ে উচ্ছ্বসিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে জবি’র ১৩তম ব্যাচ, ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু বকর খান বলেন, “দীর্ঘদিনের আবদার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নেওয়ায় মাননীয় ভিসি স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত জবিয়ানদের আগামী সাফল্যের পথকে প্রশস্ত করবে বলে মনে করি।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আরেক শিক্ষার্থী বায়েজিদ বোস্তামি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিজেদের ন্যূনতম অধিকার গুলোর মধ্যে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে বসে পড়াশোনা করে নিজেকে প্রস্তুত করাও একটা অধিকার। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি সকলের জন্য যেন উন্মুক্ত করে দেয়, যাতে শিক্ষার্থীরা নিজের পছন্দ মতো বই নিয়ে সেখানে পড়তে পারে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের নিকট অনুরোধ থাকবে, ব্যক্তি, দল, সব কিছুর বাহিরে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার। প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা ও চাকরির বাজারে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও উন্মুক্ত লাইব্রেরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ভবিষ্যতে রুম সংখ্যা বাড়ানো সহ উন্মুক্ত লাইব্রেরিকে পৃথকভাবে শুধু মাত্র লাইব্রেরী বানানোর প্রস্তাব রাখছি, যাতে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে পড়াশোনা করতে পারে।”
জগন্নাথ বিশ্বদ্যিালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ব্যবহার নিয়মাবলী:
*গ্রন্থাগারে ল্যাপটপ নিয়ে প্রবেশ নিষেধ।
*গ্রন্থাগারের আশেপাশে উচ্চস্বরে কথা বলা থেকে বিরত থাকা।
* গ্রন্থাগারে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ নিষেধ।
*গ্রন্থাগারের ভিতরে খাবার খাওয়া নিষেধ।
* আগ্নেয়াস্ত্র সহ নিষিদ্ধ বস্তু রাখা নিষেধ।
* মােবাইল ফোনে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
* মােবাইল রিংটোন সাইলেন্ট রাখতে হবে।
* গ্রন্থাগারের ভিতরে নিরবতা পালন করতে হবে।