জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, সরকার নাকি আইএমএফের পরামর্শে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আইএমএফ যদি মানুষ হত্যা করতে বলে তাহলে কি সরকার মানুষ হত্যা করবে? সরকার নজিরবিহীন ভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এটাকে আমরা বলেছি নির্দয় সিদ্ধান্ত।
সোমবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে সামনে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।জিএম কাদের বলেন, মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকলে সরকার এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।
এরশাদ দেশ পরিচালনার সময় পেট্রোল, অকটেন, ডিজেলের দাম কমিয়েছিলেন উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, এরশাদ তেলের ওপর ট্যাক্স নিতেন না। তেল এমন জিনিস, এর দাম বাড়লে জনগণের হৃদয়ে আঘাত করে। আমরা মানুষের হৃদয়ে আঘাত সহ্য করতে পারি না। তেলের দাম যখন নিম্নমুখী তখন হঠাৎ করে দাম বাড়াতে হলো। বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানি তেলের মূল্য ১০৯ ডলার থেকে কমিয়ে ৮৯ ডলার হয়েছে, তখন কেন দেশে তেলের মূল্য বাড়াতে হবে।
যখন তেলের মূল্য কম ছিল, তখন হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সেই টাকা গেল কোথায়? লুটপাট হয়েছে? করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এমন অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বল ও দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে।
তেলের দাম বাড়ালেই পরিবহন শ্রমিকরা নিজেরাই এক ধরনের হরতাল ডেকে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয় জানিয়ে জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, তখন সরকার হাত-পা ধরে কিলোমিটারে ৩৫ থেকে ৪০ পয়সা বাড়িয়ে দেয়। আর পরিবহন শ্রমিকরা কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করছে। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি না হয়, তাকে পথে নামিয়ে দেওয়া হয়। জনগণের এই দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।
রেন্টাল, কুইক রেন্টাল আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে উৎপাদন ছাড়াই হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হচ্ছে দাবি করে জিএম কাদের বলেন, আমরা জ্বালানি খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলছি।
বিশ্ব ব্যাংক আর আইএমএফকে সরকার সকাল-সন্ধ্যা গালাগাল করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নাকি অনেক রিজার্ভ আছে কিন্তু এখন কেন ঋণের জন্য ধরনা দিচ্ছে? আমাদের এত রিজার্ভ গেল কোথায়?
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা প্রমুখ।