নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামের মাঝগাঁও ইউনিয়নের বউবাজার এলাকায় বিধবা ও বয়স্ক এক ভিক্ষুকের ১৬ শতক জমি দখল করে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। শনিবার ভোরে ওই হতদরিদ্র ভিক্ষুকের স্বামীর ভিটা শেষ সম্বল দখল করে নেয় প্রভাবশালী চক্র। সূর্য ওঠার আগেই ভিক্ষুক ওই বিধবার টিনের ছাপড়া ভেঙ্গে অনত্র সরিয়ে ফেলে তারা। এ ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে অসহায় ওই ভিক্ষুকের একমাত্র সন্তান আসমা বেগম।
জানা যায়, বউবাজার এলাকার আবেদা বেওয়া (বর্তমান বয়স ৬৭) স্বামী মারা যাওয়ার পর মানুষের বাড়িতে কাজ করে একমাত্র মেয়েকে বড় করে ও বিয়ে দেন। পরে বয়সের ভাড়ে সে কর্মক্ষমতা হারালে মানুষের বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে জীবন চালাতে থাকে। ১৯৫৭ সালে স্বামী আছেরউদ্দিন তার নামে ১৬ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়। এরপর স্বামী মারা গেলে ওই জমির ওপর চোখ পড়ে স্বামীর ভাগ্নে সাধু প্রামাণিকের। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ভুয়া দলিল করে ওই জমি দখল করে নেয় ভাগ্নে সাধু প্রামাণিক, তার ভাই ও ভাতিজারা। স্বামীর শেষ সম্বল হারিয়ে প্রথমে বাবার বাড়ি পাবনা ও পরে ভাসুর মফিজউদ্দিনের বাড়িতে কন্যাসহ আশ্রয় নেয় বিধবা আবেদা বেওয়া। এদিকে স্বামীর দেয়া শেষ সম্বল ফিরে পেতে স্থানীয় কয়েকজনের পরামর্শে থানা পুলিশের শরণাপন্ন হয় ওই ভিক্ষুক। থানার পুলিশ কর্মকর্তারা স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্র পর্যালোচনা করার পর গত ১৫ জুন ওই ভিক্ষুককে জমি বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু তারপরেও জমির লোভ সামলাতে না পেরে নাটোর আদালতে একটি মামলা করে সাধু প্রামাণিকের বড় ভাই বদু প্রামাণিক। মামলা দায়ের করার দুইদিন পরেই সাধু প্রামাণিক গং ভিক্ষুকের জরাজীর্ণ ঘরটি ভেঙ্গে ১৬ শতক জমি স্থাপনা শূন্য করে দেয়। এ সময় আবেদা বেওয়া তার মেয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সকালে খবর পেয়ে ওই ভিক্ষুক ও তার মেয়ে আসমা বেগম এসে দেখে কোন স্থাপনা নেই। তাদের রোপন করা ১০টি সুপারি গাছের চারাও উঠিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পরে ভিক্ষুকের মেয়ে আসমা বেগম বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় সাধু প্রামাণিক (৭০), বদু প্রামাণিক (৭৫), ফেরদৌসী বেগম (৪৫), হাসেনা বেগম (৩০), খালেদা বেগম (২৫), শফিকুল ইসলাম (৫৫), মতিন (৩৫) সহ ৭ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করে।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সিদ্দিক জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।