( হবিগঞ্জ) জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় চা বাগানে শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন।
শনিবার( ১৩ আগষ্ট ২২)ইং দুপুরে চুনারুঘাট উপজেলার সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানব বন্ধন করেন।
হবিগঞ্জের দেউন্ডি, চান্দপুর, চন্ডিছড়া,কামাইছড়া ও লস্করপুর এর শ্রমিকরা ন্যায্য দাবী আদায়ে চুনারম্নঘাট উপজেলা নিবাহী অফিসারের কাছে তাদের দাবি-দাওয়া ন্যায্য দাবীর স্বারক লিপি প্রদান করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন রায়, দেউন্ডি চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি প্রবীর বুযনাজী, সাধারণ সম্পাদক আপন বাগতি।হবিগঞ্জের ২৫টি বাগানের শ্রমিকরা পুরোপুরি কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলেছে। অথচ বাংলাদেশের চা শ্রমিকরা ১২০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন। দুই বছর পর পর শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদ নেতৃবৃন্দের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়।চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর ।এরপর ১৯ মাস কেটে গেলেও মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেননি। নতুন চুক্তি না হওয়ার কারণে শ্রমিকদের বেতনও বাড়ছে না। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ চা সংসদ নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়।সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা।চা সংসদ নেতারা মজুরি ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা করার প্রস্তাব দেন।তা সন্তুষজনক না হওয়ায় তা প্রত্যাখান করেন শ্রমিক নেতারা।এরপর এক মাস পেরিয়ে গেলেও মালিকপক্ষ আর কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।তাই দাবি আদায়ের জন্য গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন চা বাগানে শ্রমিকরা।
বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাহিদুল ইসলাম জানান, চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের সাথে আমরা বৈঠক করি। বৈঠকে আগামি ২৮ আগস্ট বাগান কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব রেখে শ্রমিকদেরকে আন্দোলন থেকে সড়ে আসার অনুরোধ করা হয়েছিল।কিন্তু শ্রমিকরা এতে রাজি হননি।এ ব্যাপারে চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, একযোগে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে মজুরি বাড়ানোর আন্দোলন চলছে৷শ্রম অধিদপ্তরের বৈঠকে ১৬ দিন পর বাগান কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার আশ্বাস দিয়ে শ্রম অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমাদের আন্দোলন প্রত্যাহারের বলা হয়েছিল।
তিনি বলেন, এতেও মালিক পক্ষের সাড়া না পেয়ে আজ শনিবার সকাল থেকে ১৬৭টি চা বাগানে পূর্ণদিবস কর্মসূচি বা আন্দোলন শুরু করেছে চা শ্রমিকরা।এতে বাগানগুলোর শতভাগ উৎপাদন বন্ধ থাকবে।চা শ্রমিক নেতারা আরো জানান, বর্তমানে তাদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা। দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতির কারণে এই টাকায় তাদের চলতে কষ্ট হচ্ছে।তাই তারা ৩০০ টাকা মজুরি দাবি করছেন।তাদের দাবি মানা না হলে তারা কাজে ফিরবেন না।প্রয়োজনে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন বলেও জানান চা শ্রমিকেরা।