লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষীপুর জেলার রায়পুরে একটি কওমি মাদ্রাসার ছাত্র নিখোঁজের ১০ দিন পর ঢাকা সদরঘাট থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিন্তু ছাত্রের পর মাদ্রাসার সুপার নিখোঁজের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। এই ঘটনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। যদিও রায়পুর থানার ওসির দাবি তার খোঁজ মিলেছে।
রায়পুুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চমকা বাজার এলাকায় অবস্থিত জামিয়া আল্লামা জাফর আহমদ উসমানী কওমি মাদ্রাসায় ছাত্র-শিক্ষক নিখোঁজের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে রায়পুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এর আগেও ওই মাদ্রাসার এক শিশুকে অপর দুই শিক্ষক পাশবিক নির্যাতন করে পালিয়ে যায়।
নিখোঁজ হাফেজ মুফতি তারেকুল ইসলাম (২৮) ওই মাদ্রাসার সুপার এবং খাসেরহাট জামে মসজিদের ইমাম। তিনি চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার সওদাগরপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম বাড়ির আবু তাহেরের ছেলে।
সদরঘাটে উদ্ধার হওয়া ছাত্র আব্দুর রশিদ (১৬) উত্তর চরবংশী গ্রামের বেপারী বাড়ির সুফিয়ান রহমানের ছেলে ও মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের ছাত্র।
আব্দুর রশিদের মা মাসুদা বেগম বলেন, আমার ছেলে গত ১৬ জুলাই সন্ধ্যার পর মাদ্রাসার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। পরদিন বিকালে খোঁজ নিলে তাকে মাদ্রাসায় পাওয়া যায়নি। ওই দিন সে মাদ্রাসায় গিয়েছিল কিনা তা কেউ নিশ্চিত করে জানাতেও পারেনি। তাকে কোথাও খুঁজে না পাওয়ায় আমরা চিন্তিত ছিলাম। এ ঘটনায় গত সোমবার বিকালে আমি থানায় জিডি করেছি। বুধবার দিন সকালে রায়পুর থানা পুলিশ খুঁজে পাওয়ার তথ্য জানায়।
হাফেজ মুফতি তারেকুল ইসলামের ভাই ওই মাদ্রাসার অপর শিক্ষক মুহাম্মদ তানবীরুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার ভোরবেলা ফজরের নামাজের পর থেকে আমার ভাইকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি ভোরে বেরিয়ে গিয়ে নামাজ পড়ালেও আর মাদ্রাসায় ফিরে আসেননি। গ্রামের বাড়িতে বা স্বজনদের কাছেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আমি মঙ্গলবার দুপুরে রায়পুর থানায় জিডি করেছি।
উল্লেখ্য, ঈদুল আজহার আগে ওই মাদ্রাসার ১২ বছর বয়সী এক ছাত্রকে মনিরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক পাশবিক (বলাৎকার) নির্যাতন করেন। ওই সময় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী মাদ্রাসা ঘেরাও করলে ওই শিক্ষকও পালিয়ে যান। একই ছাত্রকে ওই ঘটনার প্রায় ৩ মাস আগে মনির হোসেন নামের অপর শিক্ষক পাশবিক নির্যাতন করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। একের পর এক এমন চাঞ্চল্যকার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা স্কুলশিক্ষক মুরাদ হোসেন বলেন, মাদ্রাসার সুনাম রক্ষার্থে পূর্বের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি। তারা পালিয়ে যাওয়ায় স্থানীয়ভাবেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই আবার শিক্ষক ও ছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় আমরা চিন্তিত।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, ওই ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি জিডি করা হয়েছে। ছাত্রকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা থেকে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তুু নিখোঁজ সুপার কাম ইমাম এর সন্ধানে খোঁজ মিলেছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।