নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের আপত্তি তোলার পরও শ্রীলঙ্কা তাদের হাম্বানটোটা বন্দরে চীনের ইউয়ান ওয়াং-৫ জাহাজটিকে নোঙরের অনুমতি দিয়েছে। শনিবার স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে এএনআই। টাইমস অনলাইনের প্রতিবেদন বলছে, শ্রীলঙ্কা সরকার শুক্রবার জাহাজটিকে বন্দরে নোঙরের অনুমতি দেয়।
টাইমস অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউয়ান ওয়াং-৫ আগামী ১৬ আগস্ট হাম্বানটোটা আন্তর্জাতিক বন্দরে পৌঁছাবে, যদিও এটি পৌঁছানোর কথা ছিল ১১ আগস্ট। কিন্তু ভারত জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এ বিলম্ব হলো।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জাহাজটিকে ‘গোয়েন্দা’ জাহাজ বলছে। ভারত সরকার জাহাজটির নোঙর নিয়ে নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলেছে এবং নিজেদের আপত্তি শ্রীলঙ্কাকে জানিয়েছে। কিন্তু এরপরও শ্রীলঙ্কা জাহাজটিকে নোঙরের অনুমতি দিয়েছে।
চলতি সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা নিশ্চিত করেছে যে, তারা চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং হাম্বানটোটায় ইউয়ান ওয়াং-৫ জাহাজের নোঙর পেছানোর কথা বলেছে।
জ্বালানি নেওয়ার জন্য ১১ আগস্ট চীনা এ জাহাজটির বন্দরে নোঙর করার কথা ছিল এবং ১৭ আগস্ট বন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।
শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, মন্ত্রণালয় কলম্বোয় চীন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং হাম্বানটোটায় ইউয়ান ওয়াং-৫ জাহাজের নোঙর পেছানোর কথা বলেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, তারা শ্রীলঙ্কা ও চীনের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্ব এবং চমৎকার সম্পর্ককে পুনঃনিশ্চিত করতে চায়, যা একটি দৃঢ় ভিত্তির ওপর অধিষ্ঠিত। সম্প্রতি দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তা পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।
হাম্বানটোটায় চীনা জাহাজটির নোঙরের অনুমতি নিয়ে ভারত নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলছে। তাদের ধারণা, যেটিকে গবেষণা জাহাজ বলা হচ্ছে, সেটি গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহৃত হতে পারে এবং এটি সাগরতলের ম্যাপিং করতে পারে।
ইউয়ান ওয়াং-৫ একটি গবেষণা ও জরিপ জাহাজ হিসেবে পরিচিত। এটি ২০০৭ সালে নির্মিত হয়। এর ধারণক্ষমতা ১১ হাজার টন। শ্রীলঙ্কায় জাহাজটির আসা নিয়ে নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছে ভারত, কেননা এটি ভারত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাংশে স্যাটেলাইট গবেষণা চালাতে পারে।
কলম্বো থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরতে হাম্বানটোটা বন্দরের অবস্থান। উচ্চ সুদে চীনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়। ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে বন্দরটি লিজ দিয়ে রেখেছে শ্রীলঙ্কা।