বাংলাদেশের মতো চীনের বাজারেও এখন ডিম রীতিমতো ‘দামী’ খাদ্যবস্তু। গত কিছুদিন ধরে দেশটির সব প্রদেশেই বেড়েছে ডিমের দাম। কোনো কোনো প্রদেশে আগের তুলনায় এই মূল্যবৃদ্ধির হার ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। চীনের সরকারি বার্তাসংস্থা সিনহুয়ার বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
মুরগির খাবারের দাম ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে বাংলাদেশে গত প্রায় দুইসপ্তাহ ধরে ডিমের বাজারে অস্থিরতা চলছে। খুচরা বাজারে এখন প্রতি হালি ডিমের দাম ৫২ টাকা। তবে চীনে ডিমের দাম বৃদ্ধির মূল কারণ বৈরী আবহাওয়া। চীনের ‘ডিমের ঝুড়ি’ হিসেবে পরিচিত পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ জেজিয়াং, জিয়াংসু, আনহুই এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জিয়াংসিসহ সারা দেশে গত দুই সপ্তাহ ধরে চলা তাপদাহ ও খরাপ্রবণ আবহাওয়ার কারণে ডিমের উৎপাদন কম হচ্ছে বলে নিজেদের প্রতিবেদনে বলেছে সরকারি বার্তাসংস্থা সিনহুয়া। বিশেষ করে ডিম উৎপাদনে এগিয়ে থাকা প্রদেশগুলোতে গত প্রায় দু-সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার ওপরে ওঠানামা করছে। বিভিন্ন প্রদেশের কৃষকরা সিনহুয়াকে জানান, অতিরিক্ত গরমের কারণে দুর্বল হয়ে পড়ছে খামারের মুরগি, খাবারও খাচ্ছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কম। ফলে নিয়মিত ডিম দিতে পারছে কোনো লেয়ার মুরগি। খামারের পর খামারে চলছে এই পরিস্থিতি।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এফপিকে বলেন, অত্যাধিক গরম বা অস্বাভাবিক শীতে মানুষের মতো পশু-পাখিও কষ্ট পায় এবং তাদের স্বাভাবিক খাদ্যগ্রহণের মাত্রা কমে যায়। ফলে এই পরিস্থিতিতে ডিম ও দুধের উৎপাদন কমে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। চীনা কৃষকরা সিনহুয়াকে জানান, মুরগিকে তাপদাহের ভোগান্তি থেকে রক্ষায় বাড়তি বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করা যাচ্ছে না। কারণ, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সবক্ষেত্রেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। মুরগি খাবার কম খাওয়ার কারণে ডিমের উৎপাদনে ভাটা পড়েছে। তারই প্রভাবে চীনের ডিমের বাজারে শুরু হয়েছে উর্ধ্বগতি।