জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
ভারতীয় পণ্য ক্রয় বিক্রয়কে কেন্দ্র করে ভাগবাটোয়ারার টাকা নিয়ে ব্যবসায়ী দুলাল শেখ (৫৫) হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত অপর ব্যবসায়ী সুমন চৌধুরী ওরফে সুমনকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ক্লুলেস এই হত্যাকা-ের মাত্র ৪ দিনের মাথায় আসামিকে আক্কেলপুর উপজেলার হাস্তাবসন্তপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জড়িত সুমন চৌধুরী ওরফে সুমন হত্যার দায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা (পিপিএম-সেবা)।
গ্রেফতারকৃত সুমন চৌধুরী ওরফে সুমন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার হাসিমপুর গ্রামে মৃত কছিম উদ্দিন চৌধুরী ওরফে কছিম চৌধুরী ছেলে ও তার সেকেন্ট হোম ওই জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার গোয়ালডির বাসিন্দা এবং বর্তমানে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরসভার তালতলী কাঁচা বাজার রেলকলোনীতে ব্যবসার জন্য থাকেন। আর নিহত দুলাল শেখ দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বাংলা হিলির মধ্য বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত মোকছেদ আলী শেখ এর ছেলে বলে মামলা সুত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, জেলার আক্কেলপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় অবস্থান করে ভারতীয় পণ্য চোরাচালানীভাবে ক্রয়-বিক্রয় করতো দুলাল শেখ ও সুমন চৌধুরী ওরফে সুমন। গত রবিবার দুলাল শেখকে চা খাওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে যায় সুমন চৌধুরী ও অপর একজন আসামী। পরে তারা দুইজন ভিকটিম দুলালের ভাড়া বাসায় যায়। ভিকটিম দুলালের সাথে আসামী দুই জনের চোরাচালানী ভারতীয় পণ্য ক্রয় বিক্রয়কে কেন্দ্র করে চোরাচালানী ব্যবসায়ীক লেনদেনের টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। তখন আসামী সুমন উত্তেজিত হয়ে রাগের বশে পড়ে থাকা একটা বাটাম দিয়ে দুলালের মাথায় দুইবার গুরুতরভাবে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মাটিতে পড়ে যায় দুলাল শেখ। তখন অপর আসামী ভিকটিম দুলালকে বালিশ চাপা দেয়। ভিকটিম দুলাল মারা যাওয়ার পর আসামী দুই জন ঘর থেকে বের হয়ে যায়। যাওয়ার সময় অপর আসামী দুলালের লাশ ঘরে রেখেই তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। তবে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামীরা এ হত্যাকান্ডটি ঘটায়। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় আক্কেলপুর পৌরসভার তালতলী কাঁচা বাজার রেলকলোনীর ভাড়াটিয়ে ঘরের ভেতর একটি লাশ তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে ছিল। খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ও সিআইডির টিমসহ ঘটনাস্থলে পৌছে ঘরের দরজার তালা ভেঙ্গে দুলাল শেখ অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃত দেহের কপালে, নাকের নিচে মুখে, মাথার পিছনে গুরুত্বর আঘাতের চিহ্ন ছিল। ওই দিনে নিহতের ভাই আব্দুল কুদ্দুছ শেখ সংশ্লিষ্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে বৃহস্পতিবার রাত্রী অনুমান ১০টায় উপজেলায় হাস্তাবসন্তপুর এলাকা থেকে আসামী সুমন চৌধুরী গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামী সুমন এ মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা (পিপিএম-সেবা) জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সুমন চৌধুরী ওরফে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী নিজের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিকমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। অপর আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।