কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: প্রায় ৩৫ হাজার লোকের বসবাস চাঁদপুরের কচুয়া পৌরসভায়। আয়তন ১০ বর্গ কিলোমিটার। ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা হলেও প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোনো ধরনের বিনোদনকেন্দ্র ছিল না এ পৌরসভায়। পৌরবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই প্রায় এক একর ৯৬ শতাংশ পরিত্যক্ত পুকুরে ‘মুক্তি সরোবর’ নামে একটি বিনোদনকেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। এর তিন বছর বাদে দৃষ্টিনন্দন এই বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ কাজে হাত দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়ে গেছে এর ৬০ ভাগ কাজ। তবে প্রকৌশল বিভাগ বলছে, এটি নির্মাণের জন্য প্রাথমিকভাবে ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে।
কচুয়া পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, কচুয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠা লাভ করে ১৯৯৮ সালে। বর্তমান সরকারের আমলে এটি ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত হয়। ধাপে ধাপে পৌরসভার যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য উন্নয়ন হলেও ছিল না কোনো বিনোদনকেন্দ্র। পৌরসভার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণ করা। তাই এ দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্প তৈরি করে ২০২০ সালে ‘মুক্তি সরোবর’ নামে একটি বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এরপর ২০২১ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে আরও ৭-৮ মাস সময় লাগবে।
প্রকৌশল বিভাগের তথ্য মতে, শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা, বয়স্কদের জন্য হাঁটার ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য মুক্তমঞ্চ নির্মাণ হচ্ছে বিনোদনকেন্দ্রটিতে। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে শুধু কচুয়া পৌরবাসীই নয়, বিনোদন এবং অবসর সময় কাটানোর সুযোগ পাবে পুরো উপজেলার মানুষ। পাশাপাশি কচুয়ার ব্যবসা-বাণিজ্যও সমৃদ্ধ হবে আরও।
এ বিষয়ে সমাজসেবক নাছির উদ্দিন প্রধান বলেন, আগামী ৫০ বছরেও কচুয়া পৌরসভায় এত বড় দৃষ্টিনন্দন একটি বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণ হবে আশা করিনি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মেয়রের এমন উদ্যোগে আমরা স্বাগত জানাই। আশা করছি এটির নির্মাণ শেষ হলে শুধু কচুয়া পৌরসভা নয়, পুরো উপজেলাবাসীর জন্য বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
কচুয়া বাজারের ব্যবসায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, আমাদের কচুয়াতে বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সরকারের উদ্যোগে এই বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণ হলে আমাদের শিশু সন্তানদের জন্য অনেক উপকার হবে। আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসবে।
এ ব্যাপারে কচুয়া পৌরসভার মেয়র মো. নাজমুল আলম স্বপন বলেন, বিনোদনকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শেষ হতে আরও ৭-৮ মাস সময় লেগে যেতে পারে। নির্মাণকাজ শেষে এটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এ বিনোদন কেন্দ্রের মাধ্যমে কচুয়া পৌরবাসী এবং জনগণ সারা দিন পরিশ্রমের পর একটু হলেও বিশ্রামের সুযোগ পাবে। পাশাপাশি খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে এবং বয়স্ক লোকজন হাঁটা-চলার সুযোগ পাবে। কচুয়া পৌরবাসী এটির উন্মুক্ত হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।