কথায় আছে, কাজে নাই। ড্রেসিং রুমে আছে, মাঠে নাই। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের আগ্রাসনের বাস্তবতা অনেকটা এমনই। আগ্রাসী ও ভয়ডরহীন খেলা নিয়ে আলোচনা অনেক হলেও মাঠের ক্রিকেটে প্রতিফলন পড়ে না। টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ পাওয়া শ্রীধরন শ্রীরামের কাছে এটিরই সমাধান খুঁজবে দল, জানালেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের গোলকধাঁধায় দীর্ঘদিন ধরেই পথ খুঁজে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। সবশেষ ১৫ ম্যাচে জয় এসেছে কেবল ২টিতে। জয়-হারের চেয়েও বড় কথা, নিজস্ব কোনো ঘরানা তৈরি হয়নি। ‘বাংলাদেশি ব্র্যান্ড’, ভয়হীন খেলা, এসব নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও লাভ হয়নি কিছুতেই।
২০ ওভারের ক্রিকেটে নতুন দিনের সন্ধানে বিসিবির ভরসা আপাতত শ্রীরাম। অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলে ৬ বছর ও বিভিন্ন আইপিএল দলে কাজ করা এই কোচ রোববার ঢাকায় আসবেন। সাবেক এই ভারতীয় অলরাউন্ডারের কাছে বাংলাদেশের চাওয়ার কথা খালেদ মাহমুদ জানালেন শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে।
“শ্রীরাম কি পরিবর্তন আনতে পারে? মাইন্ডসেট। আমরা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার কথা বলি, ফিয়ারলেস ক্রিকেট খেলার কথা বলি, এই বীজটা শুধু পাঁচ-ছয় জনের মধ্যেই গেলে হবে না। পুরো দলের ভেতরেই এই ব্যাপারটা থাকতে হবে।”
“যেহেতু বিশ্বকাপ পর্যন্ত আমরা অন্য কোনো সংস্করণে খেলব না, তাই এটাই সেরা সময় এই বীজটা দেওয়ার, যেন ওই স্বাধীনতা নিয়ে যে ভীতিহীন ক্রিকেট খেলার কথা আমরা বলছি, সেটা সবাই খেলতে পারে। শ্রীরাম যখন আসবে, যেহেতু সে টি-টোয়েন্টি দল নিয়ে অনেক বেশি কাজ করে, ওর কিছু ইনপুট তো থাকবেই। ও যেহেতু এশিয়ারই, আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে মিল আছে। কথা বার্তা বা যোগাযোগ করতেও সহজ হবে। ও আসার পর অবশ্যই একটা পরিবর্তন আমরা পাব।”
রাসেল ডমিঙ্গোর কোচিং দর্শনের তেমন কোনো ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায়নি টি-টোয়েন্টিতে। কিছুদিন আগে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস প্রকাশ্যেই বলেন, বর্তমান কোচিং স্টাফ ততটা আগ্রাসী নয়। এবার খালেদ মাহমুদও বললেন, দলে নতুন চিন্তা, নতুন দর্শন যুক্ত করা জরুরি।
“প্রত্যেক কোচের দর্শন আলাদা। ওর (ডমিঙ্গো) দর্শন হয়তো (টি-টোয়েন্টিতে) আমাদের ক্রিকেট ব্র্যান্ডের সঙ্গে মানাচ্ছে না। আমরা পারফর্ম করতে পারছি না টি-টোয়েন্টিতে। একটা আলাদা দর্শন এলে অসুবিধা কী! সেটা যদি দেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো হয়, তাহলে সেটা আমাদের অবশ্যই নিতে হবে। দেখা যাক এটা কতটুকু কাজ করে।”
কোচিং প্যানেলে নতুন একজন যুক্ত হচ্ছে, তা নিয়ে এখনও প্রধান কোচের সঙ্গে কোনো কথায় হয়নি বিসিবির। বিস্ময়কর শোনালেও এই দাবিই করলেন মাহমুদ। সাবেক এই অধিনায়কের ধারণা, আনুষ্ঠানিকভাবে শোনার পর এই পরিবর্তনকে ইতিবাচকভাবেই নেবেন ডমিঙ্গো।
“রাসেলের সঙ্গে এই ব্যাপারে কোনো কথাই হয় নাই। রাসেল এখনও বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান কোচ, আমরা হেড কোচের দায়িত্ব দিয়ে কাউকে আনছি না। আমরা টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট হিসেবে আনছি। বিসিবি সর্বোচ্চ সংস্থা, যদি মনে করে কারো জায়গায় কাউকে দেবে, দিতে পারে। রাসেল এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেনি।”
“আমি মনে করি, রাসেল যথেষ্ট পেশাদার। আমি যত দিন ওর সঙ্গে কাজ করেছি, আমি জানি সে ইতিবাচক একজন মানুষ। আমি মনে করি না, এটা তেমন কোনো সমস্যা।”