কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ফেয়ার প্রাইজ কার্ড অনলাইন নিবন্ধনে অনিয়ম ও দুর্নীতির দৃশ্য ভিডিও করায় চেয়ারম্যানসহ কতিপয় সদস্য একজন সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে। গুরুতর আহত ওই সাংবাদিককে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
শনিবার (২৭ আগষ্ট) দুপুর দেড়টার দিকে রাজীবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।জানাগেছে, সারাদেশের মতো রাজিবপুর সদর ইউনিয়নেও প্রধানমন্ত্রীর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ১০ টাকা কেজি দরের চাল উত্তোলনের ফেয়ার প্রাইজ কার্ড অনলাইন নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর রাজিবপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিরন মোহাম্মদ ইলিয়াস, ইউপি সচিব নুরুন্নবী ও কতিপয় ইউপি সদস্য যোগসাজশ করে কৌশলে প্রতি কার্ড ধারীর কাছ থেকে ট্যাক্সের কথা বলে ১৫০ টাকা করে দাবি করেন। দাবীকৃত টাকা না দিলে অনলাইন নিবন্ধন হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এসময় ভোক্তাদের সাথে জনপ্রতিনিধিদের তুমুল বাকবিতন্ডা শুরু হয়।
এ খবর জানার পর স্থানীয় সাংবাদিক সহিজল ইসলাম সজল, মুরাদুল ইসলাম মুরাদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রফিকুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদে যায়। ভোক্তারা সাংবাদিকদের দেখে ১৫০ টাকা করে গ্রহণের বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ করতে থাকেন। এ সময় তাদের বক্তব্য মোবাইলে ভিডিও করতে থাকেন সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম। সাথে সাথে ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ প্রচার করেন মুরাদুল ইসলাম মুরাদ। ভিডিও করার দৃশ্য দুর্নীতিবাজদের চোখে পড়লে রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের ৪নং ও ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ার ও শাহাব উদ্দিন সাংবাদিক রফিকুলের উপর হামলে পড়ে। একপর্যায়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে সিঁড়িতে ফেলে দেয়। সিঁড়িতে পড়ে গেলে ইউপি সদস্যদের মধ্যে শাহাব উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, আবুশামা দেওয়ান, শাহ আলম, ফরিজল হক, বাবুল আক্তার, আব্দুল হাই ও মহিলা সদস্যের স্বামী মিষ্টার সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় রফিকুলের মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয় শাহ আলম নামের এক ইউপি সদস্য।
আহত সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম বলেন,উপস্থিত শতাধীক কার্ডধারী, রাজিপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সৎম্পাদক সজল, মুরাদ ভাই, দুই জন পুলিশ সদস্যের সামনে আমার উপর এ বর্বরোচিত হামলা চালায় দুর্নীতিবাজরা। ইউপি চেয়ারম্যান মিরন মোহাম্মাদ ইলিয়াসের ইন্ধনে এ হামলা চালানো হয় । রাজিবপুর থানা পুলিশ ও অন্যান্য সাংবাদিক না থাকলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলত বলে দাবী তার । এ ঘটনায় ওইদিনই রাজিবপুর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারীদের শাস্তির দাবী জানিয়েছেন রফিকুল।
এব্যাপারে রাজিবপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ মোজাহারুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।