পাকিস্তানে বন্যা পরিস্থিতি আরো সংকটজনক। উদ্ধারকাজে নেমেছে নৌবাহিনী। ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা খাইবার পাখতুনখোয়া এবং সিন্ধ অঞ্চলে। লাখ লাখ মানুষ ঘরছাড়া। মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে জার্মানি সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।
পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শেরি রহমান জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ চেহারা দেখছে পাকিস্তান। রবিবার একশ-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে। বন্যাকবলিত এলাকা কার্যত সমুদ্রের মতো দেখতে লাগছে। সে কারণেই নৌবাহিনীর সাহায্য চাওয়া হয়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়ায় কয়েক লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। একই পরিস্থিতি সিন্ধ অঞ্চলেও। গ্রামের পর গ্রাম কার্যত ভেসে গেছে। কোনো চিহ্নমাত্র নেই। বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে বইছে সিন্ধু নদী।
মন্ত্রী আরও বলেন, শীতকাল থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দেখতে শুরু করেছে পাকিস্তান। রেকর্ড পরিমাণ তুষারপাত হয়েছে। গরমে তাপমাত্রা কোনো কোনো এলাকায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাপিয়ে গেছে। তীব্র দাবানল দেখা গেছে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। এবার বন্যা। এমন বন্যা পাকিস্তান কখনো দেখেনি বলে তার দাবি।
রহমান জানিয়ছেন, জাতিসংঘ দাবি করেছিল, পরিকাঠামোর অভাবেই পাকিস্তানে এমন বন্যা হচ্ছে। কিন্তু এখন তারাও বুঝতে পারছে, এর সঙ্গে পরিকাঠামোর সম্পর্ক নেই। টানা আট সপ্তাহ ধরে নিরন্তর বৃষ্টি হয়েছে। স্বাভাবিকের তুলনায় ৭০০ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিকাঠামোর প্রশ্ন তোলা অর্থহীন।
এদিকে সিন্ধুনদীতে জলের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। সিন্ধু নদীর উপর তৈরি বাঁধ সুকুর ব্যারেজের উপর দিয়ে বইছে নদী। ব্যারেজ থেকে নদীর জল বিভিন্ন দিকে পাঠানোর জন্য যে খালগুলি তৈরি করা হয়েছে, সেগুলিও ভেসে গেছে বলে জানা গেছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানিয়েছেন, সারা জীবনে এমন বন্যা তিনি কখনো দেখেননি। দেশবিদেশ থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকে। চীন, জাতিসংঘ, আরব আমিরাত, অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য সকলেই পাকিস্তানকে সাহায্য করার কথা বলেছে। তবে এখনো দেশে সাহায্যে গিয়ে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছে প্রশাসন।