সেই ২০০০ সালে সিলেট বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল অলক কাপালির। দেশের হয়েও এক সময় খেলেছেন নিয়মিত। এবার লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় বললেন তিনি।
অলক এমন এক দিনে বিদায় বললেন যেটা তার নিজের ও বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় দিন। ২০০৩ সালের ২৯ অগাস্ট তারিখেই টেস্টে দেশের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই হ্যাটট্রিক তাকে বোলার হিসেবে খ্যাতি দিলেও মূলত ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলেছেন জাতীয় দল ও ঘরোয়া ক্রিকেটে।
সোমবার নিজের স্বীকৃত ফেসবুক পাতায় এই ঘোষণা দেন অলক। দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটকে বিদায় বললেও সীমিত সংস্করণে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে যাবেন তিনি, ‘আমি ২০০০/০১ মৌসুম থেকে দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলে আসছি। বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট, ওয়ানডে, টি২০ ফরম্যাটে অংশগ্রহণ করেছি । এই দীর্ঘ পথচলায় অনেকেই আমাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন, উনাদেরসহ সকল শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীর কাছে আমি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
‘আমি বাংলাদেশ ও বৃহত্তর সিলেটের ক্রীড়াঙ্গনের অংশ হতে পারায় গর্বিত।’
‘আমি মনে করি এখন তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য আরো বেশী প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার সুযোগ করে দেওয়া উচিত । তরুণ ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে আসার জন্য এবং আমার পরিবারকে বেশী সময় দেওয়ার লক্ষ্যে আমি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ২০২২/২৩ মৌসুম থেকে শুধুমাত্র লিমিটেড ওভার ক্রিকেট ( ওডিআই, টিটুয়েন্টি ইত্যাদিতে) অংশগ্রহণ করবো।’
‘আমি বৃহত্তর সিলেটের ক্রিকেটের সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করছি। সিলেটের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য যেকোনো সহায়তার জন্য আমি সাধ্যমত চেষ্টা করবো প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি।’
২০০২ সালে অভিষেকের পর বাংলাদেশের হয়ে ১৭ টেস্ট খেলেছেন অলক। যার সর্বশেষটি সেই ২০০৬ সালে। দুই যুগের বেশি পথচলায় ১৭২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন অলক। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে তার থেকে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড আছে তুষার ইমরান (১৮২) ও মোহাম্মদ আশরাফুলের (১৭৪)।
প্রথম শ্রেণীতে ৩৩.৮৪ গড়ে ৯ হাজার ১৩৮ রান করেছেন ৩৮ পেরুনো অলক। এতে আছে ২০ সেঞ্চুরি আর ৩৭ ফিফটি। বাংলাদেশিদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি রান কেবল তুষার ও নাঈম ইসলামের। লেগ স্পিনে অলক নিয়েছেন ২১৭ উইকেট। ৭ বার ৫ উইকেট ও একবার ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। টেস্টে বাংলাদেশের পথচলার শুরুর সময়টায় অলক ছিলেন সেরা ফিল্ডারদের একজন। প্রথম শ্রেণীতে তিনি নিয়েছেন ১৪৪ ক্যাচ।
২০০০ সালে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে সিলেটের হয়ে অভিষেক হয়েছিল ধানমন্ডি মাঠে। গত নভেম্বরে নিজ বিভাগ সিলেটের হয়েই রংপুরের বিপক্ষে খেলেছেন শেষ ম্যাচ।