আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে হবে বলে মনে করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে দলকে সংগঠিত করা। এরপর জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে রাজপথে গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
বুধবার (৩১ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নার রোগমুক্তি কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে যুবদল।
সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এরপর সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করবে এবং এর অধীনে একটি সুষ্ঠু-অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করব যেন আমাদের সবাইকে তৌফিক দেন যে সংগ্রামের মধ্যদিয়ে অবৈধ সরকারকে পরাজিত করতে পারি। বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতা যেন ফিরিয়ে দিতে পারি। খালেদা জিয়াকে যেন যেন মুক্ত করতে পারি।
তিনি বলেন, আজকে বিএনপির সবচেয়ে বড় দায়িত্ব খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমানের সৈনিক হিসেবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে আমাদের সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের সামনে আরও কোনো বিকল্প রাস্তা নেই। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দিনরাত কাজ করছেন গণতন্ত্রকে ফিরে আনার জন্য।
খালেদা জিয়া তার মৌলিক অধিকার চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডামের চিকিৎসকরা বারবার বলছেন— বিদেশে একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, রাষ্ট্র ক্ষমতায় অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বসে আছেন, যার মধ্যে ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার পর্যন্ত নেই। তিনি বিদেশ যেতে অনুমতি দিচ্ছে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার সম্পর্কে যে উক্তি করেছেন আমরা কল্পনাও করতে পারি না। প্রধানমন্ত্রী অবৈধভাবে বসে থাকলেও এই ধরনের উক্তি করতে পারে এটা সমস্ত রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। এর কারণ এটা হচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, প্রতিমুহূর্তে খালেদা জিয়াকে তিনি হিংসা করেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে একেবারে অনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কথা বলেন, যা দেশের মানুষ ভালো চোখে দেখে না।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করেছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল বলেন, মিশেল ব্যাচেলেট ফিরে যাওয়ার পর আমাদের এখানে যারা মন্ত্রী আছেন, তারা প্রচার করেছেন যে হাইকমিশনার নাকি মানবাধিকার সম্পর্কে কোনো কথাই বলেননি। এখানে মানবাধিকার নাকি খুব ভালো। সেই হাইকমিশনার অফিস থেকে বিবৃতি দিয়ে বলেছে যে সরকারের মন্ত্রীরা সব মিথ্যা কথা বলেছে। এতে করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।