ভোলা প্রতিনিধি:
মো. সোহেল মাতব্বর (৩৫) নামের এক যুবক প্রতারণা করে ১০ বছরে ৫ বিয়ে করে ৪র্থ স্ত্রীরির টাকায় লিবিয়া ঘুরে ৫ম বিয়ে ভোলায় এসে আটক হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ভোলার ৫ম স্ত্রী রিপা বেগম বাদী হয়ে ভোলা সদর থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন।
আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) সকালে পুলিশ তাকে ভোলা আদালতে প্রেরণ করেছেন বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাফর ইকবাল নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দুইটার দিকে ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়া গ্রামের তাঁর ৫ম স্ত্রীর বাড়ি থেকে ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশের একটি টিম তাকে আটক করেন।
ভোলা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ফরহাদ সরদার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃত প্রতারক সোহেল মাতব্বর মাদারীপুর জেলার সদর থানার শ্রীনার্থ গ্রামের ছবির মাতব্বরের ছেলে। বিয়ে নিয়ে এ যুবকের অভিনব প্রতারণা করে যাচ্ছিলেন এতো দিন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, সোহেল একজন প্রতারক। সে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে ১০ বছরে একে একে ৫টি বিয়ে করেছেন। প্রতিটি বিয়ে করার সময় সে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিত। ২০১০ সালে তাঁর গ্রামের বাড়ি শ্রীনার্থে সে প্রথম বিয়ে করে। সেই সংসারে তার ২ ছেলে ও ১টি মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিয়ের কয়েক বছর পর সে রাজধানী ঢাকার উত্তরায় ফুটপাতে গেঞ্জি বিক্রি করতেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে আরো ২টি বিয়ে করেন।
২০২০ সালের দিকে রাঙামাটি ঘুরতে গিয়ে বাসে এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এরপর প্রতারনা করে তাকেও বিয়ে করেন। তাঁর টাকায় ১ বছর আগে সে লিবিয়া ঘুরে আসেন। প্রতিটি তরুণী থেকে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক। চতুর্থ স্ত্রী থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লিবিয়ায় ঘুরতে যায় প্রতারক সোহেল। এরপর চলতি বছরের মে মাসে ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে ১৬ বছরের এক অপাপ্ত বয়সের তরুণীকে বিয়ে করেন। ঢাকার উত্তরায় সোহেল যে রুমে ভাড়া থাকত সেই রুমের এক যুবকের মাধ্যমে ভোলার ওই তরুণীর ঠিকানা পায় সে। ২ মাস প্রেমের সম্পর্কের পর চলতি বছরের মে মাসে ওই অপ্রাপ্ত তরুণীকে বিয়ে করে প্রতারক সোহেল।
তিনি আরো জানান, সোহেলের প্রতারণা কেউই বুঝতে পারত না। সে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করত। তাঁর ২য় স্ত্রী ঢাকার উত্তরায় কোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় সে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তাঁর ৪র্থ স্ত্রী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে সোহেল ভোলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে বিয়ে করে শশুর বাড়িতে অবস্থান করছে। এরপর সে (৪র্থ স্ত্রী) ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশকে তাঁর প্রতারণার বর্ণনা দেন। এরপর গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে পুলিশ তার ৫ম স্ত্রীর পিতা নুরুল ইসামের বাড়ি থেকে তাকে আটক করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, তাকে (সোহেলকে) আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর প্রত্যেক স্ত্রীকে থানায় ডেকে আনা হবে। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে তাঁর আরো প্রতারণার বিষয় গুলো জানতে পারবো। এরপর তাকে আদালতে তোলা হবে।