চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। সংকট এতটাই চরমে পৌঁছে যে, দেশটির জনগণ টানা বিক্ষোভের পর এক সময় রাষ্ট্রপতি বাড়িতে হানা দেয়। জনতার রোষানল থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পালান দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। এরপর নতুন প্রেসিডেন্ট হন রনিল বিক্রমাসিংহে।
নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নিলেও দেশটির অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে এখনও উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। বরং দিন দিন পরিস্থিতি অবনতির দিকেই যাচ্ছে।
এর মধ্যেই বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক জন আইলিয়েফ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি সামনের কয়েক সপ্তাহে আরও অবনতি হতে পারে।
এমনিতেই বলা হচ্ছে, দেশটির লাখ লাখ অতি দরিদ্র্যের পর্যাপ্ত খাবার কেনার সামর্থ নেই। তার ওপর এই হুঁশিয়ারি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে।
জন আইলিয়েফ দু’দিনের সফরে এসেছিলেন শ্রীলঙ্কায়। সফর শেষে তিনি বলেছেন, দেশটিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডব্লিউএফপির সাড়া দেওয়া চরম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তার ভাষায়- আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হল জীবন রক্ষাকারী খাবার ও পুষ্টি সহায়তা পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছে দেওয়া। আমাদের এই পদক্ষেপের কেন্দ্রে থাকবে শিশু এবং নারীরা।
তিনি আরও বলেন, ডব্লিউএফপির সর্বশেষ জরিপ বলে দেয় যে, শ্রীলঙ্কায় অনাহারে থাকা মানুষের সংখ্যা দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যেসব বাড়িতে জরিপ চালানো হয়েছে, তার প্রায় অর্ধেকই খাদ্য সংকটে ভুগছে। কারণ, আয়ের পথ হারিয়েছেন তারা। খাদ্যে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পর্যায়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্য সরবরাহ চেইনে বিঘ্ন ঘটছে। জ্বালানিসহ মৌলিক চাহিদাগুলোর ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে।
ডব্লিউএফপির সহায়তা গ্রহণকারী একটি গ্রুপের সঙ্গে তিনি আলোচনা করেন। সেখানে তিনি তাদের নানা সমস্যার কথা শোনেন। এর মধ্যে প্রতি ৫টি বাড়ির মধ্যে চারটি বাড়িতে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথবা তারা অনাহারে থাকছেন এই কঠিন বাস্তবতায় টিকে থাকার জন্য। এর মধ্যে শহর অঞ্চলেরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাড়ি আছে।
এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দীনেশ গুনাওয়ার্ধেনে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি সাবরির সঙ্গে আলোচনা করেছেন জন আইলিয়েফ। তিনি শ্রীলঙ্কায় অবিলম্বে খাদ্য অনিরাপত্তার সমাধান নিয়ে কথা বলেছেন। সূত্র: লঙ্কা বিজনেস নিউজ, ডেইলি মিরর