বিশ্বের শীর্ষ সমরাস্ত্র রফতানিকারক দেশ রাশিয়া অস্ত্র কিনছে- যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবিতে চলছে তোলপাড়। বিশ্লেষকরা বলছেন, উৎপাদন সক্ষমতায় কোনো কমতি নেই রাশিয়ার। তবে ইউক্রেনে বহুমুখী হামলার কারণে কমেছে গোলা-বারুদ ও রকেটের মজুদ; ফলে বেড়েছে ঘাটতি। এ কারণেই উত্তর কোরিয়া থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞার কারণে চাপের মুখে থাকা মস্কোর অস্ত্র সংগ্রহের জন্য পিইয়ংইয়ং ছাড়া গতি নেই বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
বিশ্বের শীর্ষ অস্ত্র রফতানিকারক দেশগুলোর অন্যতম রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের পরই অবস্থান দেশটির। বিশ্বের অর্ধশত দেশে রয়েছে রুশ সমরাস্ত্র। পিস্তল-রাইফেল থেকে শুরু করে ট্যাংক-সাজোয়া যান, যুদ্ধবিমান, যুদ্ধ জাহাজ এমনকি দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, কী নেই রাশিয়ার সমরাস্ত্র রফতানির তালিকায়?
এবার সেই রাশিয়াই অস্ত্র কিনছে উত্তর কোরিয়া থেকে- এমন সংবাদে চলছে তোলপাড়। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ফুরিয়ে আসছে রুশ সমরাস্ত্র ভাণ্ডার, তাই গোলাবারুদ কিনতে হচ্ছে অন্য দেশ থেকে। পেন্টাগনের এমন বক্তব্যকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকরা।
ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজের নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইয়াং উক বলেন, বিষয়টি এমন নয় যে রাশিয়া নিজস্ব অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উৎপাদনে সক্ষম নয়। সমস্যাটি হলো ইউক্রেনকে ঘিরে বহুমুখী আক্রমণের ফলে গোলা বারুদ এবং রকেটের মজুদ কমছে রাশিয়ার। কারখানাগুলোতে উৎপাদন চললেও তা সরবরাহ করতে সময় প্রয়োজন। তাই আপাতত জরুরি ভিত্তিতে সরবরাহ নিশ্চিত করতেই অন্য দেশের কাছ থেকে অস্ত্র আনছে রাশিয়া।
তবে এত দেশ থাকতে উত্তর কোরিয়াই কেন? গবেষকরা বলছেন, কূটনৈতিকভাবে একা হয়ে পড়েছে রাশিয়া। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ম্যাথিও ক্রোয়েনিগ বলেন, রাশিয়া কূটনৈতিকভাবে এমন একটা অবস্থানে রয়েছে যে, সমরাস্ত্রের জন্য অন্য কোনো দেশের দরজা তার জন্য উন্মুক্ত নেই। তাই উত্তর কোরিয়া আর ইরানই গোলা এবং রকেটের জন্য একমাত্র উপায় মস্কোর। এছাড়াও বিভিন্ন সমরাস্ত্র দিয়ে উত্তর কোরিয়াকে সহায়তা করেছে রাশিয়া। তাই সেই অস্ত্রগুলোই আবার ফেরত আনছে মস্কো।
এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে চীনের ভূমিকা নিয়েও। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করার মতো ঝুঁকিতে যাবে না বেইজিং। ম্যাথিও ক্রোয়েনিগ আরও বলেন, চীনের কাছে মূল ফ্যাক্টর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা। বেইজিং কোনোভাবেই আবারও মার্কিন কড়াকড়িতে পড়তে চায় না। তাই তারা কখনোই সরাসরি অস্ত্র সরবরাহ করবে না রাশিয়াকে। তবে উত্তর কোরিয়াকে অস্ত্র সরবরাহে বাধাও দেবে না।
গেল মাসেও ওয়াশিংটন জানায়, ইরানের কাছ থেকে ড্রোন কেনার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।