কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ এক সন্তানের জননীর সাথে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা অবস্থায় এক সহকারী শিক্ষককে আটক করে থানায় দিলেন এলাকাবাসী। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের জকুরটল এলাকায়। আটককৃত শিক্ষকের নাম মোঃ নুরুজ্জামান খন্দকার। তিনি উপজেলার উত্তর ঘোঘারকুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত । বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী থানায় মামলা করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ভুক্তভোগী ওই নারী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে।
ওই এলাকার একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার দক্ষিণ বালাবাড়ী গ্রামের মোঃ বকুল মিয়ার কন্যা মোছাঃ জান্নাতী বেগমের (২৭) সাথে ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড় ইউনিয়নের জকুরটল গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে তাজুল ইসলামের ৭ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর তাদের কোল জুড়ে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয় । তাদের দাম্পত্য জীবন ভালোই কাটছিল। এরই মধ্যে সংসারে অভাব-অনটন দেখা দিলে তাজুল ইসলাম অভাবের তারনায় ঢাকায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরী নেন। স্বামীর দীর্ঘ অনুপস্থিতির সুযোগে সহকারি শিক্ষক নুরুজ্জামান আত্বীয়তার সুবাধে জান্নাতীর বাড়িতে আসা যাওয়া করে এবং সখ্যতা গড়ে তোলে। এরই এক পর্যায়ে তাদের উভয়ের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের এ অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে এলাকার লোকজন শিক্ষককে সতর্ক করে দেন। কিন্তু কার কথা কে শুনে…. !
শিক্ষক নুরুজ্জামান বুধবার রাতে ওই নারীর বাড়ীতে যান। দীর্ঘ সময় ধরে ওই বাড়িতে অপেক্ষা করায় স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তারা তাদের বাড়িতে গিয়ে উভয়কে শোয়ার ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন।
এরপর এলাকার লোকজন ৯৯৯ এ ফোন দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনের কাছে ঘটনার বিস্তারিত শুনে দু’জনকে আটক করে ফুলবাড়ী থানায় নিয়ে যায় । আটক নুরুজ্জামান দুই সন্তানের জনক বলে জানা গেছে।
গৃহবধূ জান্নাতীর আত্মীয় রবিউল জানান, আমার ভাগ্নিকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ওই সহকারী শিক্ষক অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে। এখন আমরা মামলা করার জন্য থানায় এসেছি। গৃহবধূ জান্নাতি জানান, মাষ্টার তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনৈতিক কাজে রাজি করিয়েছে। আমি এখন অসহায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি । অন্যথায় আত্মহত্যা করতে বাধ্য হব।
উত্তর ঘোঘারকুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাবেদ আলী জানান, বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। পরে শুনেছি নারী কেলেংকারীর ঘটনায় ধরা পড়েছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুজ্জামান জানান, আমি শুনেছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুর রহমান জানান, শিক্ষক ও ভিকটিম থানায় রয়েছেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।