আতপ চাল রফতানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে ভারত। এখন থেকে বাংলাদেশে আতপ চাল আমদানিতে ২০ শতাংশ হারে রফতানি শুল্ক দিতে হবে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের। খুদ রফতানিও নিষিদ্ধ করেছে দেশটি। আমদানিকারকদের আশঙ্কা, ভারতের এ সিদ্ধান্তে আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে চালের বাজার। এদিকে শুল্ক বৃদ্ধিকে দাম বাড়ানোর অজুহাত হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
লাগামহীনভাবে চালের দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয় সরকার। এ লক্ষ্যে আমদানি বাড়াতে দেয়া হয় শুল্ক ছাড়। গত ২৮ আগস্ট চাল আমদানির উপর ১০ শতংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে বাজারে। আমদানি বেড়ে যাওয়ায়, কয়েকদিনের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরায়, সব ধরনের চালের দাম কেজিতে কমে আসে ৫ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু, ভারত আতপ চাল রফতানির উপর শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়ায়, আবারও অস্থিতিশীল হচ্ছে চালের বাজার।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে সবধরনের আতপ চাল রফতানিতে বাড়তি ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা জানানো হয়। বৃহস্পতিবার থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে আতপ চাল রফতানিতে খরচ বাড়বে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের। যার বিরূপ প্রভাব পড়বে আমদানিতে-এমনটাই মনে করছেন আমদানিকারকরা।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক দীনেশ কুমার পোদ্দার বলেন, ৪ টাকা ডিউটি আরোপ করা মানে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ টাকা। যখনই প্রতি কেজিতে ৬ টাকা ডিউটি আরোপ করা হলো তখন রফতানিকারকরা অবশ্যই এই ৬ টাকা বাড়িয়েই আমাদের কাছে চাল রফতানি করবে তখন অবশ্যই বাংলাদেশে চালের দাম ৬টাকা বেড়ে যাবে।
আমদানি করা চাল পাইকারি ও খুচরা বাজারে আসছে না-এমন অভিযোগ করে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি করা চালের পুরোটাই কিনে নিচ্ছেন মিল মালিক ও হাতে গোনা বড় কিছু কোম্পানি। দেশের উৎপাদন এবং আমদানি মিলে পুরো মজুদ থাকছে তাদের কাছেই। আর তাদের খেয়াল-খুশিতেই নির্ধারিত হচ্ছে দাম। সরবরাহ বাড়াতে মিল গেট এবং মজুদ পর্যায়ে তদারকির দাবি ব্যবসায়ীদের।
সরকার বেসরকারি পর্যায়ে যে ১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে, তার মধ্যে ১ লাখ টনের কাছাকাছি আতপ চাল আনা হতে পারে। চট্টগ্রাম ও সিলেটে আতপ চালের চাহিদা বেশি।
প্রসঙ্গত, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আর মিনিকেট ও বিআর ২৮ চাল মিলছে যথাক্রমে ৬৮ ও ৫৪ টাকা কেজিতে।