এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা অংশ নেয় আত্মবিশ্বাস তলানিতে নিয়ে। পাকিস্তান অংশ নেয় আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকে। ফাইনালে মুখোমুখি হওয়ার আগে নিজেদের আত্মবিশ্বাসী মনে করছেন পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা দলের কোচ।
রবিবার বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে দুই দল।
টি-২০ বিশ্বকাপের পর টানা তিন সিরিজে হেরেছে দ্বীপরাষ্ট্র। ১১ ম্যাচে জয় সাকল্যে ২টি।
অপরদিকে, পাকিস্তান অংশ নেয় তিন সিরিজের দুটিতে জিতে। ৭ ম্যাচের ৬টিতেই জিতেছে বাবর আজমের পাকিস্তান। এমন সমীকরণের দুই দলের এশিয়া কাপ জয়ের মিশন ভালোভাবে শুরু হয়নি। নিজেদের সূচনা ম্যাচে দুই দলই হারের তিক্ত স্বাদ নেয়। শুরুর ধাক্কা সামলে দুই দল আজ ফাইনাল খেলবে।
দাসুন শানাকার শ্রীলঙ্কা সর্বশেষ ফাইনাল খেলেছিল ২০১৪ সালে। মিরপুরের ফাইনালে ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ ছিল দুবারের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। শানাকা বাহিনী আজ ফাইনালে নামছে আসরে টানা চার জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে। যাতে রয়েছে সর্বশেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারানোর তরতাজা স্মৃতি।
তারপরও লঙ্কান অধিনায়ক হালকা মেজাজে নিচ্ছেন না বাবরদের, ‘টানা চার জয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু ফাইনালে পাকিস্তানকে হাল্কা মেজাজে নেওয়ার কোনো কারণ নেই।’ পাকিস্তানের কোচ সাকলাইন মুস্তাক চাইছেন সুপার ফোরের হারের ভুলগুলো শুধরে ফাইনাল খেলতে, ‘সাজঘরে আমি ভুলগুলো নিয়ে কথা বলেছি। এটা মনে রাখতে হবে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা শক্তিশালী প্রতিপক্ষ।’ দুই দলের পরস্পরের মুখোমুখিতে পাকিস্তানের জয় ১৩ এবং শ্রীলঙ্কার ৯।
আসরের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের স্পিনে নাজেহাল হয় শ্রীলঙ্কান ব্যাটিং লাইন। ১০৫ রানে গুঁড়িয়ে হার মানে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। প্রথম ম্যাচে হারের পর শানাকার সুযোগ্য নেতৃত্বে পিথুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, ভানুকা রাজাপক্ষে, হাসারাঙ্গা, মাদুশাঙ্কা, থিকশানা, কারুণারতেœরা ঘুরে দাঁড়ান। একে একে তুলে নেয় টানা ৪ জয়। বাংলাদেশের ১৮৩ রান টপকে জয় পায় ২ উইকেটে। সুপার ফোরে উঠে গোছানো ক্রিকেট খেলতে থাকে দ্বীপরাষ্ট্র। আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়ে লিগ পর্বে হারের প্রতিশোধ নেয়। দ্বিতীয় ম্যাচে আসরের ফেবারিট ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ছিটকে দেয়। পরশু রাতে ফাইনালের ড্রেস রিহার্সেল ম্যাচে পাকিস্তানকে হারায় ৩ ওভার আগে।
আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচ জিতলেও পাকিস্তানকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মানছেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক, ‘আমরা জানি পাকিস্তান অনেক শক্তিশালী দল। তাদের অনেক ভালোমানের ক্রিকেটার রয়েছেন। খুবই শক্তভাবে ফিরে আসার ক্ষমতা রয়েছে দলটির। তবে ফাইনাল নিয়ে আমরাও প্রস্তুত।’
শানাকারা খেলতে এসেছেন দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক ধস নিয়ে। এমন জটিল পরিস্থিতিতে দেশের জনগণকে শিরোপা উপহার দিতে চান লঙ্কান অধিনায়ক, ‘এশিয়া কাপ জিতে আমরা আমাদের জনগণকে কিছু উপহার দিতে চাই।’
টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন বাবর আজমরা। সেই ধাক্কা সামলে টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। যদিও হেরে যায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে। ৭ ম্যাচে ৬ জয়ের আত্মবিশ্বাসী বাবর বাহিনী এশিয়া কাপে অংশ নেয়। কিন্তু প্রথম ম্যাচে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হেরে যায়। পরের ম্যাচে হংকংকে মাত্র ৩৮ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে সুপার ফোরে জায়গা নেয়।
সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ভারতকে হারিয়ে প্রতিশোধ নেয়। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খাঁদের কিনারায় দাঁড়িয়ে ১ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় পায় নাসিমের টানা দুই ছক্কায়। যদিও শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হারে।
কোচ সাকলাইন মনে করেন আজ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলবে দল, ‘ভারতের বিপক্ষে আমরা জিতেছি ভালো ব্যাটিংয়ে রান তাড়া করে। ম্যাচটিতে সব কিছুই ঠিকমতো চলছে। আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়েই ফাইনাল খেলব।’
দুবারের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানকে পুনরায় এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে দলের সেরা ক্রিকেটার অধিনায়ক বাবরের ব্যাট জ্বলে উঠতে হবে। ছন্দে থাকা বাবর আসরের ৫ ম্যাচে রান করেছেন মোট ৬৩। সর্বশেষ ম্যাচেই করেছেন ৩০ রান। রান করতে হবে মোহাম্মদ রিজওয়ানকেও।