রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর রাজা হিসেবে ঘোষিত হয়েছেন তৃতীয় চার্লস। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেন নতুন রাজা। একই সাথে রাজা তৃতীয় চার্লসের স্ত্রী হিসেবে কুইন কনসোর্ট উপাধি পেয়েছেন ক্যামিলা। তবে কেনো তাকে রানি না বলে কুইন কনসোর্ট বলা হচ্ছে তা নিয়ে কৌতুহল অনেকের মনে। তাই এ বিষয়টি পরিষ্কার করতে টাইমস ম্যাগাজিন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
মূলত, রানি এবং কুইন কনসোর্ট এই দুটি উপাধির মধ্যে অনেক বড় একটি পার্থক্য আছে। ব্রিটেনের ঐতিহ্য অনুযায়ী, মূল ক্ষমতার অধিকারী অর্থাৎ রাজ পরিবারের কোনো নারী বংশোধর যদি রাজ সিংহাসনে বসেন তাহলে তিনি হবেন ব্রিটেনের রানি। অন্যদিকে, কুইন কনসোর্ট উপাধির অর্থ হলো, রাজার স্ত্রী। অর্থাৎ, সিংহাসনে বসা রাজ পরিবারের পুরুষ বংশোধরের স্ত্রী, যিনি মূল ক্ষমতার অধিকারী হবেন না। তাই খুব স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই ক্যামিলাকে কুইন কনসোর্ট উপাধি দেয়া হয়েছে। ব্রিটিশ রাজ পরিবারে এর আগে সর্বশেষ কুইন সনসোর্ট উপাধি পেয়েছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মা। রাজা ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যুর পর দ্বিতীয় এলিজাবেথ রাজ সিংহাসনে বসার পর তিনি কুইন মাদার বা রানির মা উপাধি পান।
অবশ্য ক্যামিলাকে এই উপাধি দেয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল অনেক জটিলতা। রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রথম স্ত্রী হিসেবে এই উপাধি পাওয়ার কথা ছিল প্রিন্সেস ডায়ানার। কিন্তু ১৯৯৬ সালে তাদের বিচ্ছেদের কারণে বিষয়টি জটিল হয়ে ওঠে। ডায়ানার সাথে চার্লসের বিচ্ছেদ এবং ডায়ানার মৃত্যুর জন্য ব্রিটেনের জনগণের কাছে চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়ান ক্যামিলা। রাজার স্ত্রীর মতো এতো সম্মানের একটি স্থানে ডায়ানার বদলে তাকে মেনেই নিতে পারছিলেন না ব্রিটিশ জনগণ। বহুবার অপমানিত হয়েছেন ক্যামিলা। মিডিয়াতেও তার চরিত্র নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে একাধিকবার। তাই জনসমর্থন না থাকায় ক্যামিলাকে এই পদবি দেয়া হবে কিনা তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
তবে এ বিষয়ে শেষে হস্তক্ষেপ করতে হয় স্বয়ং রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে। গত ফেব্রুয়ারিতে রানির রাজত্বের ৭০ বছর পূর্তিতে নিজের একটি বিশেষ ইচ্ছের কথা প্রকাশ করেন তিনি। রানি ঘোষণা করেন, আমার আন্তরিক কামনা হলো, যখন সময় আসবে তখন যেনো ক্যামিলাকে কুইন কনসোর্ট উপাধি দেয়া হয়। কারণ সে তার রাজ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তাই রানির ইচ্ছার প্রতি সম্মান ও সমর্থন জানাতে এবং রাজ পরিবারের ঐতিহ্য অনুযায়ী ক্যামিলাকে কুইন কনসোর্ট উপাধি দেয়া হয়েছে।