জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে তিন কর্মী হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের আয়োজনে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা থেকে একঘণ্টা মোমবাতি জ্বালিয়ে মৌন অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে রাজধানীতে ১৬টি স্পটে সমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন থেমে নেই। গত মাস থেকে যে আন্দোলন শুরু করেছি সেই আন্দোলন চলছে। আমাদের এই আন্দোলন চলতেই থাকবে। ঢাকা মহানগরীর ১৬ স্পটে বা জোনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ আমরা করব যা শুরু হয়েছে আজকের এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে।
ফখরুল বলেন, ২৭ তারিখ পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন জোনে এই সমাবেশের কর্মসূচি হবে। এরপর দেশজুড়ে আমরা আরো বৃহত্তর কর্মসূচি দেবো। আসুন, আমরা এই কর্মসূচিতে শরিক হই এবং একযোগে আওয়াজ তুলি- ‘ফয়সালা হবে কোন পথে, রাজপথে রাজপথে’, টেক ব্যাক, টেক ব্যাক বাংলাদেশ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, মুক্তি চাই।
নয়া পল্টনের সমাবেশে ছাড়া অন্যান্য সমাবেশসমূহ হচ্ছে : ১১ সেপ্টেম্বর উত্তরা পূর্ব জোন, ১২ সেপ্টেম্বর সেগুন বাগিচায়, ১৩ সেপ্টেম্বর উত্তরা পশ্চিম জোন, ১৫ সেপ্টেম্বর পল্লবী জোন, ১৬ সেপ্টেম্বর সূত্রাপুর, ১৮ সেপ্টেম্বর শ্যামপুর-কদমতলী জোন, ১৯ সেপ্টেম্বর গুলশান জোন, ২০ সেপ্টেম্বর বাসাবো বালুর মাঠ, ২১ সেপ্টেম্বর মিরপুর জোন, ২২ সেপ্টেম্বর যাত্রবাড়ী-ডেমরা, ২৩ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর জোন, ২৪ সেপ্টেম্বর লালবাগ-চকবাজার-কামরাঙ্গীরচর জোন, ২৫ সেপ্টেম্বর বাড্ডা জোন, ২৬ সেপ্টেম্বর কলাবাগান এবং ২৭ সেপ্টেম্বর তেঁজগাঁও জোনে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মতিঝিল-পল্টন-শাহজাহানপুর থানার যৌথ উদ্যোগে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান হত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ভাবলাম, প্রধানমন্ত্রী এবার ভারতে গেছেন। আমাদের তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির সমাধান হবে, অভিন্ন নদীর পানির হিস্যা আমরা পাবো, সীমান্তে হত্যা বন্ধ হবে। আমাদের যে বাণিজ্যে ব্যবধান আছে সেই ব্যবধানগুলো কমে আসবে। আমাদের আরো সুযোগ-সুবিধা তারা (প্রধানমন্ত্রী) নিয়ে আসতে পারবেন এবং তারাও সেই আশা করে গিয়েছিলেন যে ভারত সেইগুলো দিয়ে দেবে।
ফখরুল বলেন, একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশের মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থন না নিয়ে এখানে কেউ কখনো কিছু করতে পারেনি এবং আগামী দিনেও পারবে না। আজকে যে ভয়াবহ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তাদেরকে সরাতে হলে আমাদেরকে ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সমস্ত জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে ওদেরকে সরিয়ে এখানে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারত তো এখন তাদের ওপর খুশি নয়। নৃত্যগীতে ভরপুর একটা সফর দিয়েছে। আমার দেশের মানুষ যখন মারা যাচ্ছে, সীমান্তে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। মাকে তার সন্তান থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, তখন তারা জয়পুর বিমান বন্দরে গিয়ে নাচানাচি করছেন। আজকে এই দেশের মানুষ এটা ক্ষমা করবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা সকলের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক চাই, ভারতের সঙ্গেও বন্ধুত্ব চাই। ভারত আমাদের বন্ধু প্রতিম দেশ। আশা করি, ভারত বাংলাদেশের জনগণকে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যে সহযোগিতা করেছিলো, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক সংগ্রামেও সেই সহযোগিতা করবে। কারণ গণতান্ত্রিক দেশগুলো থেকে আমরা টাই আশা করতেই পারি।
ফখরুল বলেন, একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশের মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থন না নিয়ে এখানে কেউ কখনো কিছু করতে পারেনি এবং আগামী দিনেও পারবে না। আজকে যে ভয়াবহ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তাদেরকে সরাতে হলে আমাদেরকে ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সমস্ত জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে ওদেরকে সরিয়ে এখানে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপরে পুলিশের গুলি বর্ষণকে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে তুলনা করে সরকারের এহেন কর্মকাণ্ড এবং দেশের আর্থিক খাতে ক্ষমতাসীনদের ‘খাস লোকদের’ দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের ঘটনার কঠোর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল।
মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর-রশীদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক এসকে সিকদার কাদিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসসহ শাহবাগ-পল্টন-মতিঝিল থানা মহাগরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।