আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সদ্য প্রয়াত ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য। এতে অংশ নিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের ব্যক্তিগত বিমানে না আসার অনুরোধ জানিয়েছে ব্রিটেন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যে অনেক লোক সমাগম হবে, তা আগে থেকেই অনুমান করে ইংল্যান্ডের পক্ষ থেকে সব দেশের কাছে এই অনুরোধ করা হয়েছে।
স্থান সংকুলানের সমস্যার জন্যই এই ব্যবস্থা। আগামী সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে ব্রিটেনের প্রয়াত রানির। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা তাবড় রাষ্ট্রপ্রধানদের। সেই দীর্ঘ হাইপ্রোফাইল তালিকায় উল্লেখযোগ্য নাম— মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লেন, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডার্ন, জাপানের সম্রাট নারুহিতো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন, স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ প্রমুখ।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কাছে বেশ কয়েকটি অনুরোধ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপ্রধানরা ব্যক্তিগত বিমানের পরিবর্তে যেন বাণিজ্যিক বিমানে চড়ে লন্ডনে আসেন। পাশাপাশি, যেখানে রানির শেষকৃত্য হবে, সেখানে রাষ্ট্রপ্রধানদের নিজস্ব গাড়ি বা হেলিকপ্টার ব্যবহার করার কোনওরকম সংস্থান থাকবে না। পশ্চিম লন্ডনের একটি জায়গা থেকে আগত রাষ্ট্রনেতাদের বিশেষ বাসে করে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি। স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে শুরু হবে রানির শেষকৃত্য। পাশাপাশি, সরকারি অতিথিদের সঙ্গে আসা কোনও সহকারী বা কর্মকর্তাদের ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবিতে যাওয়ার অনুমতি থাকবে না। জায়গা সংকুলান না হওয়ার জন্যই এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, রানির শেষকৃত্যের আগের দিন অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যায় বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লস আগত রাষ্ট্রনেতাদের সম্মানে একটি বিশেষ রিসেপশনের আয়োজন করেছেন। পাশাপাশি, ল্যাকাস্টার হাউসে রাখা ‘কনডোলেন্স বুকে’ শোক জানাতে পারবেন বিশ্বনেতারা।
প্রয়াত এলিজাবেথকে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়া সাধারণ মানুষের জন্যও বিধিনিষেধ জারি করেছে ব্রিটিশ সরকার। সেই বিধিনিষেধে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, রানির কফিনের সঙ্গে কোনওরকম সেলফি তোলা যাবে না। কোনও রকম ফুল বা মোমবাতি ব্যবহার করে শ্রদ্ধা জানানো যাবে না। হাউস অব ওয়েস্টমিনিস্টারে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ। হাউস অব পার্লামেন্টে কোনও রকম খাবার ও পানীয় নিয়ে ঢোকার অনুমতি থাকবে না।
পাশাপাশি, যারা রানিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন, তাদের ছাতা, মোবাইল ফোনের পাওয়ার ব্যাংক, প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ, শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত দাঁড়াতে হতে পারে। ভিড় সামলাতে মোতায়েন করা হবে দেড় হাজার সেনা। ১৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত রানিকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ। রবিবার রাত ৮টায় ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হবে।
এদিকে, জানা গেছে সিডনির একটি ভল্টে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের একটি চিঠি সংরক্ষিত আছে, যা আরও ৬৩ বছর পর অর্থাৎ ২০৮৫ সালে জনসমক্ষে আনা হবে। ১৯৮৬ সালের নভেম্বর মাসে চিঠিটি লিখেছিলেন তিনি। এলিজাবেথের সেই বার্তা জানতে সিডনিবাসীকে এখনও প্রায় ছ’দশক অপেক্ষা করতে হবে। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মোট ১৬বার অস্ট্রেলিয়া সফর করেছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।