বাইরে তালা মেরে ভাঙা হচ্ছে ঐতিহাসিক স্থাপনা ‘বড় কাটরা’র মূল ভবন। প্রায় এক মাস ভাঙন চললেও টের পায়নি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর। বলা হচ্ছে, দক্ষিণ সিটির অনুমতি নিয়েই ভাঙা হচ্ছে চারশ’ বছরের পুরাতন স্থাপনাটি। যদিও সিটি করপোরেশন এখন বলছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমানা নির্ধারণ না হওয়ায় ধ্বংস হচ্ছে প্রাচীন পুরাকীর্তি।
মুঘল আমলে সরাইখানা হিসেবে নির্মিত হতো বড় কাটরা। প্রায় পৌনে চারশ’ বছরের পুরনো স্থাপনাটি ঢাকার ঐতিহাসিক নিদর্শনের অন্যতম। আগেই দখল ও ধ্বংস হয়েছে বড় অংশ। এক মাস ধরে ভাঙা হচ্ছে মূল ভবনের অংশ।
বাইরে তালা মেরে ভেতরে চলে ভাঙচুর। স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানালেও কানে নেননি দখলকারীরা। স্থানীয়রা বলেন, সারাক্ষণ বাইরে থেকে দরজায় তালা মেরে ভেতরে ভাঙচুর চালানো হয়। রাতে কয়েকটা ট্রাক এনে ভেতরের বর্জ্য নিয়ে যায়।
মাসব্যাপী চলা ভাঙচুরের পর ঘটনাস্থলে আসেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তা। তাকেও ভেতরে ঢুকতে দিতে চান না। অপেক্ষা করিয়ে ভবন ভাঙার অনুমতি পত্র দেখান একজন। তিনি দাবি করেন, এটি ভাঙার অনুমতি দিয়েছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
জমির মালিক আলি হোসেন জানান, ২০০১ সালে সিটি করপোরেশন ভবন ভাঙার নোটিশ দেয়। আমি সে সময় টাকার অভাবে ভাঙার কাজ শুরু করতে পারিনি। পরে ২০১৬ সালে আবার নোটিশ দেয়।
প্রত্নতত্ব বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক রাখি রায় বলেন, আমি যদি দেখি যে এটা সংরক্ষিত পুরাকীর্তির অংশ তাহলে আমি অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হায়দার আলী বলেন, ভাঙার চিঠিটি যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে সেটি পাওয়ার পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো। যদি সে বেআইনি কাজ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজউকের সহকারী অথরাইজড অফিসার সুরোত আলী রাসেল বলেন, এসব জায়গায় আমরা সহজেই প্ল্যান দিই না। আমার জানামতে উনাদের প্ল্যান সঠিক না।
বড় কাটরা ভাঙা ঠেকাতে চক বাজার থানায় জিডি করেছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আরবান স্টাডি গ্রুপ। তারা বলছে, সীমানা নির্ধারণ জটিলতায় দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে পুরাকীর্তি।
ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো সংরক্ষণে ২০১৮ সালে নির্দেশনা দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত