গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই বলিউড ভাইজান খ্যাত তারকা সালমান খানকে হত্যার জন্য আবারও ছক কষেছিলেন বলে বেরিয়ে এসেছে দিল্লি ও পাঞ্জাব পুলিশের তদন্তে।
লরেন্স বিষ্ণোই যে সালমানকে নিশানা করেছে, সেটা ২০১৮ সালে তার স্যাঙাত সম্পত নেহরাকে গ্রেফতারের পরই জানা গিয়েছিল। মাসখানেক আগে পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওলাকে খুন করার পর সালমানকে হত্যার জন্য ‘প্ল্যান বি’ তৈরি করে ওই গ্যাং।
চলতি বছরের মে মাসে একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে ৩০ রাউন্ড গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় জনপ্রিয় পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মসেওলাকে। ওই হত্যার পেছনে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দলকেই পুলিশের সন্দেহ।
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে পাঞ্জাব ও দিল্লি পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হয় সিধু হত্যায় অন্যতম সন্দেহভাজন কপিল পণ্ডিত, যিনি লরেন্স বিষ্ণোইয়ের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
ওই শার্প শুটারকে জিজ্ঞাসাবাদেই বেরিয়ে আসে সালমান হত্যার দ্বিতীয় ছক। জানা যায়, মুম্বইয়ে পানভেলের সালমানের সাধের খামারবাড়িতেই তাকে খুন করার প্রস্তুতি চলছিল।
সেজন্য ওই এলাকায় সালমানের বাড়ির কাছে বাসা ভাড়া নেন কপিল, যাতে সালমানের ফার্মহাউস ‘রেকি’ করতে সুবিধা হয় তাদের। এ কাজে কপিলের সঙ্গে ছিলেন দুই সহযোগী সন্তোষ যাদব এবং শচীন বিষ্ণোই তপন।
এ বছরের শুরুর দিকেই মুম্বাইয়ের ওই খামারবাড়িতে প্রায় এক মাস কাটিয়েছেন সালমান খান।
পুলিশ বলছে, এ বলিউড তারকাকে হত্যার জন্য কপিল আর তার দুই সহযোগী পিস্তল ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল।
তারা এটা জানত যে গাড়ি দুর্ঘটনায় মামলায় জড়ানোর পর থেকে সালমানের বাহন সাধারণত মাঝারি গতিতেই চলে। আর ওই খামারবাড়িতে গেলে সালমানের সাথে থাকে কেবল তার দেহরক্ষী শেরা, বাড়তি তেমন কোনো নিরাপত্তার আয়োজন থাকে না।
লরেন্স বিষ্ণোইয়ের লোকজন সালমানের ভক্ত সেজে তার খামারবাড়ির নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে খাতিরও জমিয়ে ফেলেছিল, যাতে তার গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
যে রাস্তা দিয়ে সালমান খামারবাড়িতে যেতেন, সেই রাস্তার পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা ধারণা করেছিল, সেখানে ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার গতির বেশি তুলবে না এই অভিনেতার গাড়ি।
পুলিশ বলছে, এত পরিকল্পনা করেও খুনিরা সফল হতে পারেনি। এপ্রিলে দুবার সালমান পানভেলে ওই বাড়িতে গেলেও কপিল পণ্ডিত দুবারই সেই সুযোগ হারান, ব্যর্থ হয় তাদের ‘প্ল্যান বি’।
২০১১ সালে ‘রেডি’ সিনেমার শুটিংয়ের মাঝে সালমান খানকে হত্যার হুমকি দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন লরেন্স বিষ্ণোই। এরপর ২০১৮ সালে সালমানকে হত্যার জন্য তিনি তার সহযোগী সম্পত নেহরাকে দায়িত্ব দেন।
কিন্তু সে সময় অস্ত্রের জটিলতায় পরিকল্পনা মাফিক কাজ সারতে পারেনি খুনিরা।
২০২১ সালে থেকে তিহার জেলে বন্দি আছেন লরেন্স। গত জুনে সালমানের মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়িতে উড়ো চিঠি আসার পর তার নাম ফের আলোচনায় আসে। তবে সে সময় পুলিশের কাছে হত্যার হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।