মঞ্চে উঠেই চিরকুট ব্যান্ডের সুমি গাইতে শুরু করলেন ‘বিউটি সার্কাস’–এর প্রথম গান ‘বয়ে যাও নক্ষত্র’ শিরোনামের গানটি। তার সঙ্গে সুর তুললেন ছবিটির অভিনেত্রী জয়া আহসান। এরপর মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয় ছবির অন্য অভিনেতা ফেরদৌস ও এবিএম সুমনকেও। তারাও গাইতে থাকেন গানটি। শনিবার এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজধানীর বিয়াম অডিটোরিয়াম হলে।
বিউটি সার্কাস ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর। মুক্তি উপলক্ষে শনিবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিউটি সার্কাস কর্তৃপক্ষ।
ছবিটি ডিস্ট্রিবিউনের দায়িত্বে আছে অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার অনন্য মামুন জানালেন ছবিটি আপাতত ১১ হলে মুক্তি পাবে।
এই ছবির মাধ্যমে সিনেমার নির্মাতা হিসেবে অভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন মাহমুদ দিদার। অনুষ্ঠানে মাহমুদ দিদার বলেন, ‘এই সংবাদ সম্মেলন আমার জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ, আমার সিনেমা প্রথমবারেরর মতো প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আমার সামনে বসে আছেন জয়া আহসান, আমার মেন্টর। আমার বিগত নাট্য নির্মাতা জীবনে তার দার্শনিক ঋণ রয়েছে। বিউটি সার্কাসের অভিনেত্রী ছাড়াও সিনেমাটির ন্যারেটিভ গঠনের সঙ্গেও তিনি জড়িয়ে আছেন।
দিদার বলেন, বিউটি সার্কাস বিনোদন, ফান, ফুর্তি, প্রতিশোধের গল্প নিয়ে তৈরি। বিনোদন, ঐতিহ্য এবং সিনেমাটিক ন্যারেটিভ দাঁড় করানোর জন্য সার্কাসের প্রেক্ষাপটটাই আমার সবচেয়ে ভালো মনে হয়েছে, তাই এ প্লটটি আমার বেছে নেয়া।’
জয়া বলেন, ‘দেড় বছর পর আমার অভিনীত সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। ইমোশনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিউটি সার্কাস। ফিকশন থেকেই দেখেছি মাহমুদ দিদারের আইডিয়া খুব ভালো হয়। বিউটি সার্কাস সিনেমায় আমার জন্য অসাধারণ একটি চরিত্র লিখেছে সে, আমার খুব ভালো লেগেছে। আমি কোনো স্টান্ট ম্যান ব্যবহার করিনি শুটিংয়ে। অনেক ঝুঁকি নিয়েছি, আবার মজাও ছিল। কারণ এরকম কিছু আর পাব কি না কে জানে। আমিসহ সবাই কষ্ট করেছে।’
ফেরদৌস বলেন, ‘বিউটির প্রেমে কে পড়েনি। এ ধরনের চরিত্র আমি কখনও করিনি। আমি পজিটিভভাবে আসতে পছন্দ করি। কিন্তু এখানে এটা হয়নি। পরিচালক আমাকে কনভিন্স করেছে। অভিনয়ের ক্ষুধা থেকেই চরিত্রটি করা। যাত্রার, সার্কাসের মেয়েদের সস্তা মনে করা হয়। কিন্তু তাদেরও যে ব্যক্তিত্ব আছে সেটা মনে করা হয় না। তাদের কত রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলতে হয় সেটা এ সিনেমায় আছে। জয়ার চরিত্রটি সার্কাসের মেয়ের। সে যে এলাকায় আসে, আমি সেই এলাকার নবাব। কিন্তু আমি আমার সমস্ত শৌর্য্য দিয়েও তাকে আমি পাইনি। তার ব্যক্তিত্বের কাছে আমি হার মানি।’
ছবি: ফয়সাল সিদ্দিক কাব্য
২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর সাপাহার ও মানিকগঞ্জে সার্কাসের বিশালযজ্ঞে দুশজনের নির্মাণ সঙ্গী নিয়ে প্রায় দুই হাজার গ্রামবাসীর অংশগ্রহণে চিত্রধারণের কাজ করেন নির্মাতা। এর জন্য নির্মাতা বিশাল সার্কাস প্যান্ডেল নির্মাণ ও গ্রাম্যমেলার আয়োজন করেন। ২০১৭ সালে নির্মাণ শুরু হলেও চলচ্চিত্রটির ব্যাপ্তি ও নির্মাণের বৃহৎ আয়োজন সম্পন্ন করতে প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগে নির্মাতার।
করোনা মহামাহারির কারণেও পিছিয়েছে বহুল আলোচিত চলচ্চিত্রটির মুক্তি। অবশেষে রূপালি পর্দায় ধরা পড়তে যাচ্ছে তারকাবহুল চলচ্চিত্রটি।
চলচ্চিত্রটির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, তৌকির আহমেদ, এবিএম সুমন, শতাব্দী ওয়াদুদ, গাজী রাকায়েত, হুমায়ূন সাধু, মানিসা অর্চি প্রমুখ।
চলচ্চিত্রটিতে ব্যবহৃত হয়েছে তিনটি গান। গানগুলো গেয়েছেন চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমী, অ্যাশেজ ব্যান্ডের ইভান ও টুনটুন বাউল।