গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া।
এই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে সারাবিশ্বের অর্থনীতিতে। ফলে বিশ্বজুড়েই চলছে মূল্যস্ফীতি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে ভারতের অর্থনীতিতেও। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে দেশটির।
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘এনডিটিভি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে এ পর্যন্ত ৮০ বিলিয়ন ডলারের বেশি কমেছে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। গত সপ্তাহেও রিজার্ভ কমেছে ২০০ কোটি ডলার। বিপরীতে কমছে রুপির দামও।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআইর সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী গত সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২.২৩৪ বিলিয়ন ডলার কমে হয় ৫৫০.৮৭১ বিলিয়ন ডলার। তার আগের সপ্তাহে রিজার্ভ ছিল ৫৫৩.১০৫ বিলিয়ন ডলার, যা দুই বছরে সর্বনিম্ন। বিপরীতে ডলারের বিপরীতে ক্রমাগত দুর্বল হচ্ছে ভারতীয় রুপি। বর্তমানে এক ডলার কিনতে ভারতে ৮০ রুপি গুনতে হয়।
রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের পর থেকেই বিশ্ববাজারে বাড়তে থাকে জ্বালানিসহ নানা পণ্যের দাম। বিপরীতে ডলারের বিপরীতে মান হারাতে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রা। ভারতের অর্থনীতিতেও সেই ধাক্কা লেগেছে। টানা ২৯ সপ্তাহ ধরে কমছে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
বিশেষজ্ঞ এবং অর্থনীতিবিদরা রিজার্ভ হ্রাসের অন্যতম কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী শক্তিশালী ডলার বিক্রির মাধ্যমে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার রুপির প্রতিরক্ষাকে দায়ী করেছে। ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড মাত্রায় রয়েছে এবং চলতি হিসাবের ঘাটতি ৩.৫ শতাংশ, যা গত ১০ বছরে সর্বোচ্চ পৌঁছানোর পথে রয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত আমেরিকান মুদ্রার বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য ৭ শতাংশ কমেছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে আবার যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের দাম বেড়েছে। আগামী সপ্তাহে সুদের হার বাড়াতে পারে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। এ আভাসে মার্কিন ট্রেজারি বন্ড ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এতে ডলারও শক্তিশালী হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে অন্যান্য প্রধান আন্তর্জাতিক মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে ১ শতাংশ। এ সময়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে মার্কিন মুদ্রার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ এতে মুনাফা হচ্ছে। সূত্র: এনডিটিভি