কামরুজ্জামান শাহীন,ভোলা
রোগ-বালাইর আক্রমন ছাড়াই এ বছর ভোলায় আখের ভালো ফলন হয়েছে। মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন দেখতে ভালো দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন কৃষকরা। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর আখের রং টা একটু কম। তবে চাষীদের বেশী লাভে বিপত্তি বাঁধছে সার ও কিটনাশকের দাম বৃদ্ধিতে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, জেলায় সাত উপজেলায় এ বছর ৪৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করা হয়। তবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৪ শত ৫০ মেট্রিক টন। কিন্তু এবার লক্ষ্যমাত্রা চেয়েও ২৮৫০ মেট্রিক টন বেশী উ্ৎপাদন হয়েছে। এ বছর জেলার সাত উপজেলার আখের আবাদ হয়েছে ৪৮৯ হেক্টর জমিতে।
এরমধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ৫০ হেক্টর, দৌলতখান উপজেলায় ৩০ হেক্টর, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ১২৫ হেক্টর, তজুমদ্দিন উপজেলায় ৩০ হেক্টর, লালমোহন উপজেলায় ৩৮ হেক্টর, চরফ্যাশন উপজেলায় ২১১ হেক্টর এবং মনপুরা উপজেলায় ৫ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হয়। এসব জমিতে সর্বমোট ২৪ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন আখ উৎপাদন হয়েছে। এ বছর হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৫০ মেট্রিক টন।
এ বছর জেলায় কৃষকরা কালী বোম্বাই, নলগোড়া, বিআরসি ৪৩/৪৪/৪৫ ও ঈশ্বরদী ২০৮ জাতের আখ চাষ বেশী করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকের বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতে আখের সমারোহ। আখ কাটা, সংগ্রহ আর বিক্রি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। তবে পাইকারি বাজারে আখের দাম কম হলেও খুচরা বাজারে আখের দাম অনেক বেশি।
ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আকতার হোসেন বলেন, এ বছর ৬০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছি। পুরো জমিতে আখের উৎপাদন অনেক ভালো হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি লাভ হবে বলে আশা করছিলাম, তবে সার ও কিটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের পরিমান কম হবে। উৎপাদন খরচ পুষিয়ে তেমন একটা লাভ থাকবে না। ।
আখ চাষি সামছুদ্দিন বলেন, ৩২ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করতে গিয়ে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন বিগত বছরের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। বাজারে ৫০ হাজার টাকার আখ বিক্রি হবে। বাজার দাম ভালো কিন্তু সার ও কিটনাশকের দাম বেশী থাকায় লাভ তেমন একটা থাকবে না।
আখ চাষী মো, ইমন বলেন, ৪০ শতাংশ জমিতে আখ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে তবে রং টা এখনো ভালো আসেনি। সার ও কিটনাশকের জন্য গত বছরের চেয়ে এ বছর খরচও বেশী হয়েছে। তবে এবার আখের দাম ভালো।
খুচরা আখ ব্যবসায়ী মো. জসিম বলেন, এ বছর আখের ফলন ভালো থাকায় বাজারে সরবরাহ বেশি। কেনা-বেচাও ভালো হচ্ছে। তবে সার ও কিটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকের লাভ কম।
এ ব্যাপারে ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, এ বছর আখের ফলন ভালো হওয়ায় আখ আবাদে কৃষকদের আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। তাই চাষিরা অনেক খুশি।