গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় শিশু তাসিনকে (৬) অপহরণের পর ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যার ঘটনায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির দুইজনকে খালাস এবং একজনের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। মৃত্যপ্রাপ্ত তিন আসামির মধ্যে পাভেল ও রুবেলকে খালাস এবং জাহিদের মৃত্যুদন্ডের সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মৃত্যুদন্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল শুনানি শেষে গত ২০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এএনএম বসির উল্লাহ ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। আসামিপক্ষের শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, এ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আলী ও কাদের খান উজ্জল। তিন আসামির মধ্যে স্বীকারোক্তিদানকারী আসামি জাহিদের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পাভেল ও রুবেলকে খালাস দিয়েছেন।
২০১০ সালের ২৭ জুলাই গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম রোমেলের ছেলে তাসিন মিয়া ওরফে অর্ণব পীরগাছা গ্রামে নানা নজরুল ইসলাম মধু মিয়ার বাড়ি বেড়াতে যায়। তার নানার সঙ্গে পূর্ব বিরোধের জেরে জাহিদ, পাভেল ও রুবেল ওইদিন তাসিনকে অপহরণ করে রাতেই তাসিনের মাকে ফোন করে জহিদ ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না পেয়ে তারা তাসিনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে এক ব্যক্তির পুকুরে কচুরি পানার নিচে মরদেহ লুকিয়ে রাখে।
ঘটনার পরদিন ২৮ জুলাই তাসিনের বাবা গাইবান্ধা সদর থানায়১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি তিনজনকে মৃত্যুদন্ড দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক । বাকী ৭ জনকে খালাস প্রদান করা হয়। বিচারিক আদালতে দন্ডিতরা হলেন গাইবন্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের খামার পীরগাছা গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে জাহিদ, একই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে পাভেল ও একই উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের সোনাইডাঙ্গা গ্রামের বিল্টু মিয়ার ছেলে রুবেল। পরে মৃত্যুদন্ডাদেশ অনুমোদনের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট জাহিদের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে বাকী দুইজনকে খালাস দেন।