অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি চুরি, অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, ডিজিটাল লেনদেনে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া-এমন কিছু অপকর্ম ঠেকাতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে বিভিন্ন সেফটি ফিচার। এসব ফিচার ব্যবহার করে ব্যক্তিগত তথ্য আপনি নিজেই নিরাপদ রাখতে পারেন। ফেসবুকের প্রাইভেসি সেটিংস থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া যায়, কে কতটুকু আপনার তথ্য দেখতে পারবে। কিছু নিরাপত্তা কৌশল চালু করতে হবে আপনার ব্যবহৃত মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে। এ ধরনের নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে এ আয়োজন-
ফেসবুকে অপরিচিত বন্ধু নয়
ফেসবুকে অপরিচিত কাউকে বন্ধু তালিকায় যোগ না করা উচিত। আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি অপকর্মকারীরা খুব সহজেই হাতিয়ে নিতে পারবেন যদি তিনি বন্ধু তালিকায় যোগ থাকেন। নতুন কাউকে ফ্রেন্ডলিস্টে অ্যাড করলে তার প্রোফাইল দেখে নিন।
প্রাইভেসি সেটিংসগুলো যাচাই করুন
ফেসবুক প্রায়ই তার প্রাইভেসি সেটিংসে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে থাকে। এটা করা হয় ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য আরও সুরক্ষিত রাখার জন্য। বিভিন্ন প্রাইভেসি সেটিংসের মাধ্যমে আপনি নিজেই নিজের তথ্য, ছবি, ভিডিও কারা দেখতে পারবে সেটি নির্ধারণ করতে পারেন।
পাসওয়ার্ড বদলান
অনলাইনে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য কয়েক মাস পর পর নিজের অনলাইন আইডির পাসওয়ার্ড বদল করুন। এক পাসওয়ার্ড দীর্ঘদিন ব্যবহার করবেন না। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিতে ছোট, বড় হরফ, সংখ্যা ও বিভিন্ন চিহ্ন যোগ করুন।
ফেসবুকে রয়েছে দুই স্তরের নিরাপত্তা
লগ ইন সেটিংস থেকে ‘টু-স্টেপ অথেনটিকেশন’ চালু করতে পারেন ফেসবুকে। দুই ধাপ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা আরও দৃঢ় হয়।
আলাদা আইডি থেকে পেজ চালান
যারা ফেসবুকে ব্যবসা পরিচালনা করেন তারা চেষ্টা করবেন সেই ফেসবুক পেজের জন্য আলাদা অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নেওয়ার। নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে পেজ ম্যানেজ করতে গিয়ে বিপদে পড়তে পারেন।
গেম বা কুইজ অ্যাপ থেকে সাবধান
ফেসবুকে অনেক গেম ও কুইজের অ্যাপ দেখা যায়। আবার আজকাল কিছু অ্যাপ আসে যেগুলোর মাধ্যমে অন্যরা নাম গোপন রেখে আপনার মেসেজ দিতে পারে। এ ধরনের অ্যাপ থেকে সাবধান। এতে গেম খেলার সময় আপনার অনেক তথ্য চুরি হতে পারে। অ্যাকাউন্টও হারাতে পারেন।
সতর্ক হোন ইনস্টাগ্রামে
ফেসবুকে প্রতিটি পোস্টে প্রাইভেসি নির্ধারণ করা যায়। ইনস্টাগ্রামে তা নেই। ইনস্টাগ্রামে অপরিচিতদের যোগ না করাই ভালো। তথ্য চুরি ঠেকাতে আপনার অ্যাকাউন্ট প্রাইভেট করে রাখুন। এতে যারা আপনার সম্মতিতে যুক্ত আছে তারাই শুধু দেখতে পারবে আপনার দেওয়া ছবি বা ভিডিও।
সাইবার বুলিং ঠেকাতে রিপোর্ট করুন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাজে কন্টেন্ট পেলে রিপোর্ট করুন। আপত্তিকর পোস্টে অনেকে অপরিচিতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এতে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হন অনেকে। তর্কে না জড়িয়ে আপত্তিকর পোস্ট, ছবি রিপোর্ট করার অপশন ব্যবহার করতে পারেন।
মেসেঞ্জার ব্যবহারে সতর্কতা
মেসেঞ্জারে কিছু বাড়তি নিরাপত্তা গ্রহণ করতে পারেন। যেমন মেসেঞ্জারে পার্সোনাল ইনবক্স যেন কেউ দেখতে না পারেন সে জন্য অ্যাপলক দিয়ে বাড়তি সুরক্ষা দিতে পারেন। প্রয়োজন ছাড়া মেসেঞ্জারে চাওয়া ক্যামেরা, অডিও পার্মিশন না দেওয়াই ভালো।
ই-মেইলের নিরাপত্তা
যে কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইমেইল ব্যবহার বাধ্যতামূলক। তাই ইমেইল নিরাপদ রাখতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। শুধু আপনার ই-মেইল হ্যাক করতে পারলে হারাতে পারে অনেক কিছু। যে কোনো ডিভাইসে আপনার ইমেইল দিয়ে লগিন দেবেন না। নিজের রেগুলার ডিভাইসেই মেইল অ্যাকাউন্ট রাখুন।
লোকেশন সার্ভিস বন্ধ রাখুন
লোকেশন শেয়ার সার্ভিস অপ্রয়োজনে চালু করবেন না। আবার আমরা আজকাল হুটহাট অনেককে গুগল ম্যাপের লোকেশন দিয়ে রাখি। এতে আপনার ফোনের অনেক প্রাইভেট ডাটাও অন্য কেউ চেক করতে পারে।
অনলাইনে কেনাকাটার সময় সাবধান
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পেজ বা লিংকের মাধ্যমে অনলাইন শপে কেনাকাটা করে। পেমেন্ট করার সময় আমরা সচরাচর কার্ড ব্যবহার করি। পেমেন্ট করার পর কোনো অসংগতি পেলে ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপনার কার্ডের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হোন।