রাশিয়ার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘সারমাট’ সর্বাধুনিক কৌশলী ওয়ারহেড বহন করে। যার ফলে এটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। পশ্চিমাবিশ্বে এটি ‘শয়তান’ ক্ষেপণাস্ত্র নামে পরিচিত।
বৃহস্পতিবার জেএসসি মাকেয়েভ ডিজাইন ব্যুরোর সিইও রাশিয়ার প্রধান ও জাতীয় মহাকাশ সংস্থা (রসকসমস) একটি সহযোগী ভ্লাদিমির দেগতিয়ার এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর তাসের।
দেগতিয়ার বলেন, সারমাট সবচেয়ে উন্নত কৌশলী ওয়ারহেড দিয়ে ক্ষেপনাস্ত্রটি সজ্জিত। ক্ষেপণাস্ত্রটি তার অতুলনীয় গতি, রেকর্ড-ব্রেকিং রেঞ্জ, সর্বোচ্চ নির্ভুলতা এবং ক্ষেপণাস্ত্রবিরোধী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করার সময় সম্পূর্ণ অভেদ্যতার দিক থেকে অনন্য,’ তিনি বলেন, ‘সারমাট আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র যে কোনো পরিস্থিতিতে উৎক্ষেপণে সক্ষম হবে।’
তিনি বলেন, এর বর্তমান বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, ক্ষেপণাস্ত্রটি যে কোনো অবস্থাতেই তার সাইলো (একটি ভূগর্ভস্থ চেম্বার যেখানে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়) ত্যাগ করবে এবং ১০০ শতাংশ নিশ্চয়তার সঙ্গে তার কাজটি সম্পন্ন করবে। এটির নির্ভরযোগ্যতার মার্জিনটি এতটাই নিখুঁত।
বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, সারমাটের জন্য সাইলো একটি জটিল প্রকৌশল কাঠামো, যা প্রচলিত উচ্চ-নির্ভুল অস্ত্র এবং পারমাণবিক অস্ত্রগুলো দিয়ে হামলার ক্ষেত্রে ক্ষেপণাস্ত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। দেগতিয়ার সারমাটকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে ‘মুকুট অর্জন’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা আগামী ৪০-৫০ বছরের জন্য রাশিয়ার বাহ্যিক হুমকি থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
‘আজকের প্রতিকূল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, এটি আমাদের দুর্ভেদ্য ঢাল, পারমাণবিক প্রতিরোধের প্রধান কারণ এবং শান্তির গ্যারান্টি,’ তিনি যোগ করেছেন।
দেগতিয়ার স্মরণ করেন যে, সারমাট ভয়েভোদা ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করবে, যা সোভিয়েত যুগে তৈরি হয়েছিল। নতুন ক্ষেপণাস্ত্র, তিনি জোর দিয়ে বলেন, একটি নতুন প্রজন্মের আইসিবিএম, যার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ কারণেই একে ইতোমধ্যে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং মিরাকল’ এবং ‘রকেট প্রযুক্তিতে মুকুট অর্জন’ বলে অভিহিত করা হয়েছে, দেগতিয়ার বলেছেন।
সারমাটের বৈশিষ্ট্য
সারমাট আইসিবিএম জেএসসি মেকেয়েভ ডিজাইন ব্যুরোতে পরিকল্পিত এবং ক্রসম্যাশ প্ল্যান্টে তৈরি করা হয়েছিল (উভয়টিই রসকসমসের অনুমোদিত)। বিশেষজ্ঞদের মতে, আরএস-২৮ সারমাট ক্ষেপণাস্ত্র ১০ টন পর্যন্ত এমআইআরভি বহন এবং পৃথিবীর যে কোনো স্থানে হামলা করতে সক্ষম। ২০ এপ্রিল আরখানগেলস্ক অঞ্চলের প্লেসেটস্ক কসমোড্রোম থেকে এটির প্রথম উৎক্ষেপণ হয়েছিল। পরীক্ষাটি সফল হয়েছিল। রকেটের ফ্লাইট পথের সমস্ত পর্যায়ে ডিজাইনের বৈশিষ্ট্যগুলো নিশ্চিত করা হয়েছিল।