সভ্যতার শুরুর দিকে রোগচর্চা এবং ঔষধ তৈরি/ব্যবহার একজনের হাতেই ন্যস্ত ছিলো।কালক্রমে বিজ্ঞানের সমৃদ্ধির সাথে যখন দেখা গেল একজনের পক্ষে অসুখ এবং ঔষধ দুটি শাখার জ্ঞানকে একসাথে ধারন করা সম্ভব নয়,তখনি ১২৪০ সালে জার্মানির সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রেডারিকের রাজ আদেশের মাধ্যমে অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় সাড়ে সাতশো বছর আগে ‘চিকিৎসাবিজ্ঞান’ ও ‘ঔষধবিজ্ঞান’ নামে দুটি আলাদা শাখার উৎপত্তি হয়।পরবর্তীতে ঔষধবিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক গৃহীত নাম হয় ‘ফার্মাসিস্ট’।
সাধারণ অর্থে যারা সঠিক মানসম্পন্ন ঔষধ তৈরি,বিতরণ,সংরক্ষন,পরিবহন,রোগীকে ঔষধ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানদান,ঔষধবিষয়ে সচেতনতা তৈরি এবং ঔষধের সঠিক ও কার্যকরী ব্যবহারের সাথে জড়িত থাকেন তাদেরকেই ফার্মাসিস্ট হিসেবে পরিগনিত করা হয়ে থাকে।একজন ডাক্তারকে যদি মাস্টার অফ ডিজিজ ধরা হয়,তাহলে একজন ফার্মাসিস্ট হচ্ছে মাস্টার অফ মেডিসিন।তাই চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিপূর্ণতায় ডাক্তার এবং ফার্মাসিস্ট একে অন্যের পরিপূরক।এজন্যে সারা পৃথিবীতে ফার্মাসিস্টদের আলাদা একটা সম্মানের আসন আছে।
ঔষধ তৈরি থেকে শুরু করে যথাযথ ব্যবহারের ক্ষেত্রে একজন ফার্মাসিস্ট নৈতিকতাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে বলেই মানুষের মনে তাদের জন্যে আলাদা একটা সম্মান এবং বিশ্বাসের জায়গা তৈরি হয়ে গিয়েছে।মানুষ ও সমাজের এই বিশ্বাসকে অটুট রাখতে ফার্মাসিস্টকে অবশ্যই নৈতিক মানদন্ড মেনে ঔষধ তৈরি,বিতরন কিংবা বিক্রি করতে হবে।কোনভাবেই নকল,ভেজাল,নিম্নমানের বা মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ তৈরি কিংবা বিক্রি করা উচিত নয়।নৈতিকতাকে অবলম্বন করে ঔষধ তৈরি,বিপনন এবং ঔষধের সুষ্ঠু ব্যবহারের নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে ফার্মাসিস্টরা হয়ে উঠুক স্বাস্থ্যসেবার রোল মডেল।’ফার্মাসিস্টরা হোক জাতির বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু,ঔষধ হোক সবার নিরাপদ পথ্য’।
লেখকঃ আনোয়ার হোসেন রাজু,
শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।