চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধিঃ বনানন্দের ধূসর পাণ্ডুলিপি নয়, এবার ভোলায় খোঁজ মিলেছে এক ধূসর ডিমপাড়া হাঁসের। যে ডিম দেখে অনেকেই রীতিমতো ভড়কে গেছেন।
ভোলার চরফ্যাশনে পাতিহাঁসের কালো ডিম নিয়ে চাঞ্চল্যের রেশ এখনো কাটেনি। তার মাঝেই স্থানীয় আরেক বাড়িতে ধূসর রংয়ের ডিম দেওয়া পাতিহাঁসের খোঁজ পাওয়া গেছে। তবে দেশি হাঁসের এমন রংয়ের ডিম হয় না বলে দাবি করছে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা।
বারবার কেন এমনটি হচ্ছে তা নিয়ে চিন্তিত খোদ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। ঘটনার পর্যবেক্ষণে শনিবার আবারও নতুন ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছে ওই দপ্তরের কর্মকর্তারা। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এটি উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব কিনা? নাকি নতুন রোগের লক্ষণ? অনেকে আবার বলছেন, অন্য প্রজাতির পাখির সাথে ক্রসের কারণেও এমনটা ঘটতে পারে।
এবার চরফ্যাশন পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু এর বাড়িতে এই ধূসর ডিম পাওয়া গেছে। সামু বলেন, ‘গত ২ দিন ধরে আমাদের বাড়ির পালিত একটি হাঁস ধূসর রংয়ের ডিম দিয়ে আসছে। এর আগে এমন রংয়ের ডিম কখনও দেয়নি। এ অস্বাভাবিক ডিম খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে কিনা এ নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।’
হাঁসের মালিক জুলেখা আক্তার বলেন, ‘আমি ৩ টি হাঁস লালন পালন করে আসছি। সব কয়টির বয়স ৯ মাস থেকে এক বছরের হবে। শুক্র ও শনিবার দুইটি ডিম দিয়েছে, সেগুলো স্বাভাবিক ডিমের মতো সাদা নয় ধূসর রংয়ের।’
গত ১ সেপ্টম্বর চরফ্যাশনের জিন্নাগড় ইউনিয়নে কালো ডিম পাড়া হাঁসের সন্ধান মেলে। সেই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর এবার নতুন করে আবার চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ভদ্র পাড়া এলাকায় ধূসর রঙের ডিম পাড়া হাঁস নিয়ে। খবর পেয়ে আজ শনিবার ছুটে যেখানে ছুটে যান উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারাও।
চরফ্যাশন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উপ-সহকারি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শংকর কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা পেয়েছি। তবে দুই ঘটনা আশ্চর্যজনক মনে হচ্ছে। কারণ এ ধরনের ঘটনা এর আগে বাংলাদেশে ঘটেনি। এ ডিমগুলো পুরোপুরি কালো না হলেও ধূসর কালো বর্ণের। বিষয়টি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
এ ব্যাপারে ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, ‘হাঁসে কালো ডিম ও ধূসর রংয়ের ডিম দেয়ার বিষয়টি বিস্ময়কর। এ নিয়ে চরফ্যাশনে পৃথক পৃথক দুই বাড়িতে দুটি ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি অন্য কোন জাতের সাথে এ হাঁসটির ক্রস হয়েছে। আমরা সেম্পল (নমুনা) কালেকশন করে পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে এর প্রকৃত রহস্য উৎঘাটনের চেষ্টা করবো।’
