কামরুজ্জামান শাহীন,ভোলা:
চরফ্যাশনে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রায় প্রতিটি ঘরেই কেউ না কেউ চোখ উঠা রোগে আক্রান্ত। তবে মানছেন না কেউ স্বাস্থ্যবিধি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া জনিত কারণে চোখ ওঠার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। একটি স্ক্যাবিস অপরটি কনজাংকটিভা বা চোখের প্রদাহ। বহুল পরিচিতি রোগ দুটি আমাদের দেশে চুলকানি ও চোখ ওঠা নামে পরিচিত। এর মধ্যে চোখ ওঠা সমস্যাটি প্রতি বছরই একটি নির্দিষ্ট সময়ে ছড়াতে দেখা যায়। তবে এবছর হঠাৎ করেই রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তবে স্থানীয়ভাবে এ সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই পরিচিত। রোগটি শিশু থেকে বয়স্কদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে অত্যন্ত ছোঁয়াচে। এটাকে অবহেলা না করে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
চরফ্যাশন হাসপাতার সূত্রে জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল শনিবার ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৪৫ জন রোগী চোখ ওঠা রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ০-৫ বছরের শিশু ১১৫ জন, ১৬-৪০ বছরের নারী-পুরুষ ১৮৫ জন এবং ৪১-৫০ বছর এর উপরে ১৪৫ জন ছিলেন এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। মাসের শুরুতে এই রোগের আক্রান্তের হার কম থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে এর প্রাদুর্ভাব দিগুন দেখা দিয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. আফনান নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, হঠাৎ করে ৩/৪ দিন আগে চোখ জ্বালাপোড়া, চুলকানোর সমস্যা অনুভব করছিলাম। একই সঙ্গে চোখ থেকে পানি পড়ছিল। সেদিন রাতে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর লক্ষ্য করলাম, চোখের কোণায় অনেক বেশি ময়লা জমেছে। চোখের জ্বালা-পোড়ার পাশাপাশি ব্যথাও অনুভব করছিলাম। আয়নার সামনে যাওয়ার পর দেখি চোখ একদম লাল হয়ে গেছে এবং কিছুটা ফুলেও গেছে।
চরফ্যাশন হাসাপাতালে আসা একাধিক রোগী ও রোগীর স্বজনরা বলছেন, হঠাৎ করে চোখে পানি ঝরা, চোখ লাল হয়ে ফুলে ব্যথা শুরু হয় এজন্য ডাক্তার দেখাতে এসেছেন। এই ধরনের চোখ ওঠা রোগে এলাকা বা পরিবারের বেশ কয়েজনের হয়েছে একজনের এমন হয়েছে।
এই চোখ ওঠার সমস্যা টি ছোয়াছে রোগ তাও কেন স্বাস্থ্যবিধি মানচ্ছেনা এমন প্রশ্নের উত্তরে রোগীরা বলছে, পারিবারিক বিভিন্ন কাজে করতে হলে ঘরের বাহিরে বের হতেই হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনা।
চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সোভন বসাক বলেন, চোখ ওঠা একটি আবহাওয়া জনিত ছোঁয়াচে রোগ। পরিবারের একজনের থেকে অন্যজনের হতে পারে। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের জন্য পরিবারের সবাই কাপড়, তোয়ালে ও অন্যান্য জিনিস আলাদা ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্তদের উদ্বিগ্ন না হয়ে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পাশাপাশি বাসায় আইসোলেশনে থাকতে হবে এবং বাহিরে বের হলে কালো চশমা ও মুখে মাক্স পরতে হবে।
তিনি আরও বলেন ‘সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসছে। এছাড়া এটি একটি ভাইরাল ইনফেকশন। এতে আতঙ্কের কিছু নেই। তবে সবাকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে ও সতর্ক হতে হবে।’