নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ৩০২ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয় গত ১১ সেপ্টেম্বর। সেই থেকেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ করে আসছেন ক্রাইটেরিয়ার অজুহাতে পদ বঞ্চিত ছাত্রনেতারা। এমনটি গনমাধ্যমেও আসতে থাকে কমিটি গঠনের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য। এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে প্রাথমিক তদন্তেই অভিযোগের সত্যতা খুজে পেয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর একজন সহ-সভাপতি ও ১০ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ১২ জন সহ-সাধারন সম্পাদক সহ ৩২ জনের পদ স্থগিত করা হয়।
এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে কমিটি পুনর্গঠণ ও নিয়ম-বহির্ভুতভাবে পদ পাওয়া নেতাদের বহিষ্কার এবং ত্যাগী পদবঞ্চিত ও অবমূল্যায়িতদের পদায়নের দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে প্রথম দিন থেকে। পূর্নাঙ্গ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে সর্বত্র, খুশি নন পদ প্রাপ্ত অধিকাংশ নেতারাও। বাংলাদেশের বৃত্ততম একটি ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় পদ পদবী পাওয়া জন্য কোন মানদ- মানা হয়নি। অবমূল্যায়ন ও বঞ্চিত করা হয়েছে ত্যাগী, নির্যাতিত ও নিয়মিত আন্দোলন সংগ্রাম অংশ নেওয়া নেতাদের। এর ধারাবাহিকতায় ছাত্রদলের একটি বড় অংশ বিক্ষোভ করে আসছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগের একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও গনমাধ্যমে প্রকাশ করছে পদ বঞ্চিত আন্দোলনকারী নেতারা। তাদের দাবি এই তালিকায় শেষ নয় আরো দীর্ঘ হবে কারন যাদের পদ দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশকে কেউ চিনেনা, তাই তথ্য সংগ্রহ করতে সময় লাগেছে। তাঁরা এই তালিকা ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পৌছে দিয়েছেন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্নাঙ্গ জন্য যাদের এস এস সি ২০০৩ ও পরবর্তী ও অবিবাহিত ছাত্রদের দিয়ে কমিটি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে এই কমিটিতে তা মানা হয়নি। কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় ১৯৯৯ সন থেকে ২০০২ সন পর্যন্ত এস এস সি যারা পদ পেয়েছেন তারা হলেন সহ-সভাপতি শেখ আল ফয়সাল, কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুছ আলী রাহুল, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, খায়রুল আলম সুজন, জুয়েল মৃধা, মিলন হাওলাদার, এস এম আনিসুর রহমান সহ-সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আক্তার পপি, মোহাম্মদ আরিফুল রহমান, মোঃ মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম রাড়ী, সহ আইন সম্পাদক ওয়ালি উল্লাহ।
নবগঠিত কমিটিতে বিবাহের অভিযোগ থাকার পর পদ পেয়েছেন সহ-সভাপতি মধ্যে তানজিল হাসান, নিজাম উদ্দিন রিপন, করিম প্রধান রনি, সাইফুল ইসলাম সিয়াম,
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে আকন মামুন, অহিদুল ইসলাম আপু, জুয়েল মৃধা, মামুন দেওয়ান, লিটন এ আর খান, মিঠুন দাস, সালেহ মোঃ আদনান, মাহমুদুল হাসান মারজান, মোঃ জহিরুল ইসলাম, মোঃ তৌহিদুল ইসলাম এরশাদ, রফিকুল হাসান পলাশ আয়ন, আব্দুল রহিম সৈকত, খোরশেদ আলম লোকমান, তন্বী মল্লিক, শ্যামলী অক্তার, রেহেনা আক্তার শিরীন, সহ-সাধারণ সম্পাদকদের- মাহের হোসেন, মোঃ জহিরুল ইসলাম দিপু পাটোয়ারী, এস এম ফয়সাল, কামরুজ্জামান কামরুল, মীর ইমরান হোসেন মিঠু, খন্দকার রাজ্জাকুর রহমান রাজ, বাছেরুল ইসলাম রানা, সানজিদা ইয়াসমিন তুলি, নাসরিন আক্তার পপি, মোঃ হোসাইন মিঠু, আজিজুল হক জিয়ন, সেলিম রেজা, শাহনেওয়াজ চৌধুরী, মোঃ আরিফুর রহমান আরিফ, মেহেদী হাসান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম দিদারুল ইসলাম দিদার, অলি উদ্দিন অলি, শামীম খান, সজীব বিশ্বাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহ-সম্পাদক সোহাগ সর্দার ও সদস্য আমির হামজা রাজুসহ অনেকেই।
বিগত ২০১৬ সাল থেকে নিস্ক্রিয়ও দুই একটি প্রোগ্রাম ছাড়া, তাদের দেখা যায় নাই। এরা হলেন সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, রোকনুজ্জামান রোকন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস আলী রাহুল, আনোয়ার হোসেন,সাকের আহমেদ, আবু সুফিয়ান, শিপন বিশ্বাস, মোহাম্মদ ওয়াসিফ সরওয়ার, সাখাওয়াত হোসেন সুহান, আবুল খায়ের ফরয়াজী, বায়জিদ প্রধান, মারজুক আহমেদ, মাকসুদুর রহমান সুমিত, রেজাউল করিম তাহসান, শফিকুল ইসলাম বাবু ভূঁইয়া, মাশিউর রহমান মামুন, সাইফুল ইসলাম সাইফ, আমিনুর রহমান শান্ত, সহ-সাধারণ সম্পাদক সীরাতুল সাঈম, আনোয়ার হোসেন, মেহেদী হাসান, আক্তারুজ্জামান আক্তার, মোঃ মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, মওদুদ আহমেদ, কাজী শামসুল হুদা, মুসফুর রহমান সাগর, আব্দুস সাত্তার রনি, নুর নবী পলাশ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আকন, জসীম উদ্দিন সরদার, জাহিদ পারভেজ, মানিক ভূঁইয়া, সজীব হাওলাদার, সৈয়দ ফয়সাল হোসেন, শাওখায়ত আলী সুজার, মনির হোসেন, জসীম উদ্দিন সরদার, সাইফুল ইসলাম সাগর, প্রচার সম্পাদক মোঃ ওমর সানি। এছাড়া দেড় শতাধিক ছাত্রনেতা নিস্ক্রিয়, যাদের মধ্যে পাঁচ ছয়টির বেশী প্রোগ্রাম করেন গত ছয় সাত বছরে।
ত্যাগি-নির্যাতিত পদ বঞ্চিত আন্দোলনকারী ছাত্রদল নেতারা বলেন, ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান কর্তৃক নির্দেশিত ক্রাইটেরিয়াকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শ্রাবণ-জুয়েল অনেককে এই কমিটিতে রেখেছেন সেই দোষে দুষ্ট করে তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবী, তারা সকল সহযোদ্ধার সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চান, সেক্ষেত্রে ত্যাগী, পরিশ্রমী, নিয়মিত ছাত্রনেতা যারা তথাকথিত ক্রাইটেরিয়ার কারণে বাদ পরেছেন তাদের বর্তমান কমিটিতে সংযুক্ত করে রাজনীতি করার জন্য সুযোগ দেওয়া হোক। নতুবা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সকল প্রমাণিত অভিযুক্তকে দলীয় পদ বাতিল করা হোক। এবং কেন এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হলো তার তদন্ত করে দোষিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।