হিজাব ইস্যুতে ইরানে শুরু হওয়া আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে বিভিন্ন দেশে। চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে বিক্ষোভ করছেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, গ্রিস, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ অনেক দেশের নারীরা। বাধ্যতামূলক হিজাব বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনে সংহতি জানাচ্ছেন পুরুষরাও। এদিকে, আন্দোলন-সহিংসতায় এখনও উত্তাল গোটা ইরান। বিক্ষোভ দমনে ব্যাপক ধড়পাকড় চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে সমালোচনার ঝড় বইছে জাতিসংঘ অধিবেশনেও।
হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভ-সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে ইরান জুড়ে। রইসি প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্রমেই জোরালো হচ্ছে ক্ষোভ। আন্দোলনকারীদের দমতে ব্যাপক ধড়পাকড় চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। কেবলমাত্র গিলান প্রদেশেই প্রায় সাড়ে সাতশ জনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। যাদের মধ্যে ৬০ জন নারীও রয়েছেন। সহিংসতায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধ-শতাধিক।
মাহশা আমিনির মৃত্যুর জেরে শুরু হওয়া আন্দোলন ইরানের সীমা পেরিয়ে ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি দেশে। ইরানের নারীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বিভিন্ন দেশের বিক্ষুব্ধরা বলছেন, কোনোভাবেই এমন ঘৃণ্য অপরাধ মেনে নেয়া যায় না। এই ধরনের স্বৈরাচার ও সন্ত্রাসবাদের পতন চান তারা।
এদিকে, ইরানে চলমান বিক্ষোভ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে জাতিসংঘের চলমান অধিবেশনেও। বিক্ষোভকারীদের দমনের লক্ষ্যে অহেতুক নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার না করতে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিচ ইরানের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বলেছেন, ইরানের পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট রইসির সাথে সাক্ষাৎ করেছেন মহাসচিব। মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের স্বাধীনতা নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়েছে তাকে। এছাড়া বিরোধীদের দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকেও ব্যবহার না করার আহ্বানও জানিয়েছেন মহাসচিব।
সম্প্রতি ‘ঠিকমতো’ হিজাব না পরার অপরাধে মাহশা আমিনিসহ কয়েক নারীকে আটক করা হয়। পরে পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হলে দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পরে আন্দোলন। বাধ্যতামূলক হিজাব পড়ার প্রতিবাদে রাজপথে নামে দেশটির লাখো মানুষ।