রাশেদ হোসেন রনি, জবি প্রতিনিধি :
‘Pharmacy united in action for a healthier World’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২৫ সেপ্টেম্বর (রবিবার) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের উদ্যোগে World Pharmacists Day-2022 পালিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশনের উদ্যোগে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত ইস্তাম্বুল সম্মেলনে ২৫ সেপ্টেম্বরকে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯১২ সালের এই দিনে নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশনের প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়, এই কারণে দিবসটিকে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ফার্মেসি পেশার কর্মরতদের উৎসাহ প্রদান এবং এই পেশা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ২০১০ সাল থেকে সারাবিশ্বে এই দিবস পালিত হয়ে আসছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস উপলক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এর নেতৃত্বে একটি র্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে এবং পরে বিভাগীয় কক্ষে কেক কেটে Wold Pharmacists Day উদযাপন অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগকে বিচিত্র কারুকার্যে, আলপনায় এবং নকশায় সৌন্দর্যমণ্ডিত করে তোলে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন এবং লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ মনিরুজ্জামান খন্দকার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন অনুষ্ঠানের আহবায়ক ড. মোঃ মনির হোসেনসহ বিভাগীয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
ফার্মেসী বিভাগের আয়োজনে বিভাগীয় কক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বলেন , এ দিবসটি পালন করার ফলে শুধু ফার্মেসী বিভাগের সুনাম বৃদ্ধি পাবে না বিভাগের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়েরও সুনাম বৃদ্ধি পাবে। এ রকমের আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ পালনের মাধ্যমে নিজেদেরকে বিশ্বের নিকটে তুলে ধরা যায়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ আন্তর্জাতিক মান থেকে পিছিয়ে নেই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ সুবিধা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থাকা স্বত্বেও আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়কে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আমরা আমাদের দিক থেকে ফার্মেসী বিভাগের জন্য সর্বচ্চ চেষ্টা করবো বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য। ভবিষ্যতে এই বিভাগ আরও এগিয়ে যাবে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে সেই আশা ব্যক্ত করি।
ফার্মেসি বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন রাজু বলেন, একজন ডাক্তারকে যদি মাস্টার অফ ডিজিজ ধরা হয়,তাহলে একজন ফার্মাসিস্ট হচ্ছে মাস্টার অফ মেডিসিন।তাই চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিপূর্ণতায় ডাক্তার এবং ফার্মাসিস্ট একে অন্যের পরিপূরক।এজন্যে সারা পৃথিবীতে ফার্মাসিস্টদের আলাদা একটা সম্মানের আসন আছে।ঔষধ তৈরি থেকে শুরু করে যথাযথ ব্যবহারের ক্ষেত্রে একজন ফার্মাসিস্ট নৈতিকতাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে বলেই মানুষের মনে তাদের জন্যে আলাদা একটা সম্মান এবং বিশ্বাসের জায়গা তৈরি হয়ে গিয়েছে।মানুষ ও সমাজের এই বিশ্বাসকে অটুট রাখতে ফার্মাসিস্টকে অবশ্যই নৈতিক মানদন্ড মেনে ঔষধ তৈরি,বিতরন কিংবা বিক্রি করতে হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ ২০১৪ সালে প্রথমবারের মত এই দিবসটি পালন করে । এরপর থেকে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ, বিভিন্ন ফরর্মাসিউটিক্যালস, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও বিভিন্ন ফার্মেসী পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে ঢাকাসহ বড় বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে উৎসাহের সঙ্গে র্যালি ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, সেমিনার ও বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পালনের মাধ্যমে দিবসটি নিয়মিত পালন হয়ে আসছে।