পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় ইঞ্জিনচালিত নৌকা ডুবে এখন পর্যন্ত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নৌকা ডুবির ঘটনার পর রবিবার রাত পর্যন্ত ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোমবার ভোর থেকে স্থানীয় এবং ৪ টি ডুবুরির দল মরদেহ উদ্ধারে কাজ করছে। সোমবার আরও ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ৬ জনের মধ্যে ৪ জন নারী ২ জন পুরুষ।
রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার মারেয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকার করতোয়া নদীতে শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। কতজন সাঁতরে পার হয়েছে আর কতজন নিখোঁজ রয়েছে তার সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।তবে স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৩৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন। নৌযাত্রীদের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের কালো মেঘে ছেয়ে গেছে সারা পঞ্চগড়। আজও সেখানে চলছে শোকের মাতম। নিখোঁজের স্বজনরা করোতোয়া পারে আহাজারি করছেন।
নিহতদের মধ্যে ১৬ জন নারী, ৮ জন শিশু ও পুরুষ ৭ জন রয়েছেন। আজ সকালে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক সৈয়দ মাহাবুবু আলম জানায় পঞ্চগড় রংপুর কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে ৩টি ডুবুরি দল সকাল থেকে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে ভাটি অংশের ২৫/৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত অভিযান চালানো হবে। গতরাতে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিটি পরিবারে শোকের মাতম চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুরে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় প্রায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে বোদা উপজেলার মারেয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাট থেকে বদেশ্বরী মন্দিরের মহালয়া পূজা পালনে যাচ্ছিল পুণ্যার্থীরা। পথে নদীর মাঝখানে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ায় ডুবে যায় নৌকাটি। প্রথমে স্থানীয়রা উদ্ধার তৎপরতা চালান। পরে দমকল বাহিনী ও পুলিশ উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়। উদ্ধার তৎপরতায় ২৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রায় আরো ৬০ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বজনরা দাবি করেন। রাত ৮টায় উদ্ধার অভিযান বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় এমপি রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। উদ্ধার অভিযান চলমান রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা জানান, নৌকা ডুবির ঘটনায় অনুমান করা হচ্ছে আরও ৫০/৬০ জন নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে মৃতদেহের সৎকার করার জন্য নগদ বিশ হাজার টাকা এবং আহতদের জন্য চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।