মনিকা আক্তার, রাঙামাটি প্রতিনিধি: অপার সম্ভাবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র। পাহাড়ে যখনেই টুরিজম স্পট তৈরি করতে চাওয়া হয় তখনই অবৈধ অস্ত্রধারীদের বাঁধা আসে মন্তব্য করে বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেছেন, পাহাড়ে পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে রাস্তাঘাট অবকাঠামোগত উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।
কিন্তু এই ক্ষেত্রে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বাধায় পাহাড়ে রাস্তা করা যাবে না ব্রীজ করা যাবে না, রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ কালভার্ট করা হলে পাহাড়ি অরন্যে সশস্ত্র সন্ত্রীদের যেসকল চাঁদা তোলার ঘাটি আছে তা নষ্ট হয়ে যাবে। যার কারনে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রধারীরা রাস্তা ঘাট উন্নয়ন হোক সেটা চায় না। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ^ পর্যটন দিবস পালনে রাঙামাটিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী’র সভাপতিত্বে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম, পর্যটন বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য নিউচিং মারমা, রাঙামাটি প্রেসক্লাব সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, জেলা পরিষদের অন্যান্য সদস্যগণসহ সরকারী-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভার আগে রাঙামাটির চম্পকনগর ওয়াপদা রেস্ট হাউজের সামনে থেকে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে র্যালী বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙামাটি জেলা পরিষদের সামনে এসে শেষ হয়।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার আরো বলেন, পাহাড়ে যখনেই টুরিজম স্পট তৈরি করতে যায় তখনেই বাঁধা আসে। এমতাবস্থায় যদি আমাদের সাধারণ মানুষের চেতনা বোধটাই যদি না হয়, সাধারণ মানুষ যদি এটা প্রতিহত নাকরে তাহলে পরে যেমনি করে কাপ্তাই লেক পরিস্কার করা হবে না, পর্যটন সেক্টরে উন্নতি হবেনা তথাপি ট্যুরিজমের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া অনেক টা কঠিন হয়ে পড়বে।
আলোচনা সভায় রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্প উন্নয়নের এক অমিত সম্ভাবনার দেশ। আর রাঙামাটিতে পর্যটন শিল্প বিকশিত করতে এখানে রয়েছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাপ্তাই হ্রদ এবং অসংখ্য পাহাড় ও ঝর্ণা। অতীতে যেভাবে পর্যটন শিল্পকে অবহেলা করা হয়েছে, সেভাবে এই শিল্পকে অবহেলা করলে রাঙামাটিতে পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে না। এজন্য সকলের সম্বলিত প্রচেষ্ঠা দরকার। আর সারা দেশের চাইতে এ জেলার বৈচিত্র্য এবং সংস্কৃতি ভিন্ন। যা পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা যায় না। এ জেলার সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য দেখার জন্য প্রতিবছর হাজারো মানুষ এই পার্বত্য এলাকায় ভিড় জমায়।
কিন্তু আগত এসব পর্যটকদের এ জেলার সংস্কৃতি এবং বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, থাকা-খাওয়ার সুবিধাদি এবং পর্যটন স্পটগুলো যদি আরো উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি করতে সরকারে পাশাপাশি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসে তাহলে এ জেলায় পর্যটকের অভাব হবে না।
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বক্তারা,আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তোলাসহ পর্যটনের ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উপযোগিতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া আহব্বান জানান