রূপপুর প্রকল্পের বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউরেনিয়াম দেশে আসছে আগামী সেপ্টেম্বরে। তার আগেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও দক্ষ জনবল তৈরির কাজ শেষ করতে হবে বাংলাদেশকে। সরকার সে লক্ষ্যেই এগুচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। জানানো হয়, মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর আগে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশনের যে পাঁচটি প্রতিনিধি দলের পর্যবেক্ষণে আসার কথা রয়েছে, তার তৃতীয়টি আসবে আগামী নভেম্বরে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও এগিয়ে চলেছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ। শেষের পথে প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজ। দ্বিতীয়টিতে পারমাণবিক চুল্লি বসছে আগামী মাসেই। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সম্মেলনের পাশাপাশি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সাথে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। সেখানে আগামী বছর সেপ্টেম্বরের মধ্যেই রূপপুরে ইউরেনিয়াম পৌঁছানোর ব্যাপারে একমত হয়েছে দু’পক্ষই।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর বলেন, রাশিয়ানদের প্রস্তাবনা ছিল অক্টোবরের মধ্যেই প্রকল্প এলাকায় নিউক্লিয়ার জ্বালানি সরবরাহ করা। সে জন্য অ্যাকশন প্ল্যান, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, জনবল- সবকিছু তৈরি করার ব্যাপারেও বলা হয়েছে। আমরা কিছুটা সময় নিয়েছি। বলেছি, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেন সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সেই রোড ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে।
তবে জ্বালানি পৌঁছানোর আগে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো আর জনবল যে প্রস্তুত করতে হবে, সে কথা বাংলাদেশকে আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইএইএ। প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর বলেন, প্রজেক্ট বাস্তবায়নের পাশাপাশি এগুলো হবে জাতীয় অবকাঠামো। এবং সে অনুযায়ী ২০২২ ও ২০২৩ সালের জন্যে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে রূপপুরে জ্বালানি আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। জ্বালানি আমদানির পূর্ব পর্যন্ত আমাদের কী ধরনের অবকাঠামো লাগবে, তার একটি মূল্যায়নও তারা করবে। নিউক্লিয়ার সিকিউরিটির ক্ষেত্রে কী ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে, তা আমরা চিহ্নিত করেছি। এ ব্যাপারে আইএইএ’র কাছ থেকে কোন ধরনের সহায়তা এবং রক্ষণাবেক্ষণ দরকার হবে, সেটাও চিহ্নিত করা হয়েছে।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের পাশাপাশি প্রথা অনুযায়ী প্রতিবেশী ভারতের সাথে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে বৈঠক সেরেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। নিউক্লিয়ার ক্লাবে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, তা আরও দৃশ্যমান হবে আগামী বছরের শেষ নাগাদ। সেই সাথে নিউক্লিয়ার জ্বালানি আমদানি, পরিবহন, সংরক্ষণ ও ব্যবহার পরবর্তী যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা- তা কীভাবে বাংলাদেশ করছে সেদিকেও সতর্ক নজর রাখছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা। বাংলাদেশও প্রত্যাশা করছে, তাদের নির্দেশনা মেনেই দেশের প্রথম মেগা প্রজেক্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে সুষ্ঠুভাবে।