একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নেত্রকোণার খলিলুর রহমানকে ঢাকার সাভার থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার রাতে সাভার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, ২০১৫ সাল থেকে পলাতক খলিল গ্রেপ্তার এড়াতে ঘন ঘন বাসা পরিবর্তন করতেন। এমনকি মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতেন না।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই খলিল পলাতক ছিলেন। ২০১৭ সালে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে গৃহীত হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এ সময় যোগাযোগের জন্য কোনো ধরনের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না। কিন্তু মাঝে মাঝে তার পরিবারের সদস্যরা গোপনে তার সঙ্গে দেখা করতেন।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে নোয়াগাঁও এলাকার খলিলুর রহমান ১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় খলিলুর রহমান আল-বদর বাহিনীতে যোগ দেন। চণ্ডিগড় ইউনিয়নে আল-বদর বাহিনীর কমান্ডারও হন। স্বাধীনতার পর তিনি এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি মো. খলিলুর রহমানসহ তার ভাই মো. আজিজুর রহমান, নেত্রকোণার আলমপুর ইউনিয়নের মৃত তরাব আলীর ছেলে আশক আলী, জানিরগাঁও ইউনিয়নের কদর আলীর ছেলে শাহনেওয়াজ ও একই এলাকার রমজান আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার ৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ৫ আসামির মধ্যে মো. খলিলুর রহমান ছাড়া সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়। বিচার চলাকালীন ৪ জন আসামি বিভিন্ন সময় মৃত্যুবরণ করেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ৪টিতে মৃত্যুদণ্ড ওএকটিতে ১০ বছরের সাজা ঘোষণা করেন।