শেয়ারবাজারে লেনদেনে খরা চলছে। দুই দিন আগে গত মঙ্গলবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে কেনাবেচা হওয়া শেয়ারের মূল্য ছিল প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার এ বাজারে ৮০০ কোটি টাকার কম মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। অর্থাৎ লেনদেন প্রায় অর্ধেকে নেমেছে।
গতকাল এ বাজারে মোট ৭৯৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়, যা বুধবারের তুলনায় ২২১ কোটি এবং মঙ্গলবারের তুলনায় ৬৯৬ কোটি টাকা কম। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জেনেক্স ইনফোসিস ৮৪ কোটি ১১ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে গতকালও একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনের শীর্ষে ছিল। ৭২ কোটি ৮৩ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে ওরিয়ন ফার্মা এবং ৩৮ কোটি টাকা লেনদেন নিয়ে নতুন তালিকাভুক্ত নাভানা ফার্মা ছিল দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে।
জেনেক্স ইনফোসিস লেনদেনের শীর্ষে থাকলেও ওরিয়ন ও নাভানা ফার্মার লেনদেনে ভর করে ওষুধ ও রসায়ন খাত খাতওয়ারি লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে। গতকাল এ খাতের ২৬ কোম্পানির ১৫৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা মোটের ১৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির ১৫২ কোটি ৬২ লাখ লেনদেন ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, বেক্সিমকো এবং ওরিয়ন গ্রুপের পাশাপাশি আরও কিছু আলোচিত শেয়ারে ভর করে লেনদেন বেড়েছিল। কিন্তু এসব শেয়ারের দাম কমায় এবং ফ্লোর প্রাইসে নেমে আসায় লেনদেনে ভাটা পড়েছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তি খাত লেনদেনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কিছু কারসাজি চক্র এ খাতের কয়েকটি শেয়ারদর বাড়াতে গিয়ে বিপুল অঙ্কের শেয়ার লেনদেন করছে। এর বাইরে কিছু শেয়ারে কৃত্রিম লেনদেন হচ্ছে, অর্থাৎ লেনদেন বাড়িয়ে দেখাতে নিজের এক অ্যাকাউন্ট থেকে বিক্রি করে অন্য অ্যাকাউন্টে শেয়ার কিনছেন বলে তথ্য মিলছে। এসব শেয়ারের লেনদেন না থাকলে সার্বিক লেনদেন আরও কম হতো।
গতকাল দিনের লেনদেন শেষে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৮৯ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৪৩টির কম-বেশি লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২২৭টির দর। গতকাল ১৩টি যোগ হয়ে ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা শেয়ার ও ফান্ডের সংখ্যা ২৭৭টিতে উন্নীত হয়েছে।
বেশিরভাগ শেয়ার দর হারিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হলেও শুরুটা এত খারাপ ছিল না। বরং ফ্লোর প্রাইসে বাইরে থাকা শেয়ারগুলোর বেশিরভাগ দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। এতে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স লেনদেন শুরুর প্রথম আট মিনিট শেষে ৩২ পয়েন্ট বেড়ে ৬৩৮২ পয়েন্ট ছাড়ায়। তবে লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টা পর থেকে অনেক শেয়ার দর হারাতে থাকলে সূচক ক্রমে নামতে থাকে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সাড়ে ৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬৩৫৩ পয়েন্টে থেমেছে।