এই ম্যাচের চিত্রনাট্যকারের প্রিয় চরিত্র কে। অলিভিয়ের জিরু, না কিলিয়ান এমবাপ্পে। নাকি দুজনই। প্রথমে তিনি জিরুকে দিয়ে গোল করালেন। জিরু হয়ে গেলেন হিরো। কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরিকে পেছনে ফেলে ফ্রান্সের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার মর্যাদা পেলেন ৩৬ বছরের জিরু। এরপর দৃশ্যপটে আবির্ভূত হলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। জিরু ভাঙলেন স্বদেশি অঁরির রেকর্ড। এমবাপ্পে টপকে গেলেন পেলে ও ম্যারাডোনাকে। ফ্রান্সের হয়ে নয় গোল হয়ে গেল তার। ২০১৮ বিশ্বকাপে চারটি এবং এবার এ পর্যন্ত পাঁচটি গোল করলেন তিনি। সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বকাপে নয় গোল করার রেকর্ড এটি। ১৯৬৬ সালে ২৬ বছর বয়সে পেলে নিজের অষ্টম গোল করেছিলেন বিশ্বকাপে। আর চারটি বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার রয়েছে আট গোল। আগেরদিন ম্যারাডোনাকে টপকে যান মেসি। আর কাল এমবাপ্পে একই কীর্তি গড়েন। এ দুজনের রেকর্ডের রাতে রোববার দোহার আল থুমামায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ৩-১ গোলে পোল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেল। যেখানে শনিবার তাদের সাক্ষাৎ হবে ইংল্যান্ডের সঙ্গে। ১৯৬৬-র চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড আল বাইত স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর অপর ম্যাচে সাদিও মানেবিহীন সেনেগালকে হারিয়েছে ৩-০ গোলে। হেন্ডারসন, অধিনায়ক হ্যারি কেইন ও বুকায়ো সাকা ইংল্যান্ডের তিন গোলদাতা। রবার্ট লেওয়ানডোস্কির পোল্যান্ডের মতো বিশ্বকাপ শেষ হলো সেনেগালেরও। পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ৪৪ মিনিটে গোলের খাতা খোলেন ফ্রান্সের জিরু। ৭৪ ও ৯১ মিনিটে পরপর দুবার পোলিশ গোলপ্রহরীকে হার মানান এমবাপ্পে। লেওয়ানডোস্কি একেবারে শেষ মুহূর্তে (৯৯ মিনিটে) পেনালটিতে সান্ত্বনাসূচক একমাত্র গোলটি করেন পোল্যান্ডের হয়ে। ফ্রান্সের হয়ে ১১৭তম ম্যাচে জিরুর এটি ৫২তম গোল। আর দিদিয়ের দ্রগবা যাকে কাতার বিশ্বকাপের সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ স্ট্রাইকারের মর্যাদা দিয়েছেন, সেই এমবাপ্পে কাতারে গোল্ডেন বুটের সবচেয়ে বড় দাবিদার। ব্রাজিলের (১৯৫৮ ও ১৯৬২) পর দ্বিতীয় দল হিসাবে টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের প্রত্যাশী ফ্রান্স। দেশটিকে স্বপ্নপূরণের পথে নিয়ে যাচ্ছেন জিরু ও এমবাপ্পে। পোলিশ স্ট্রাইকার আরকাদিসুজ মিলিচ ম্যাচের আগে রসিকতার ছলে বলেছিলেন, ‘এমবাপ্পেকে থামাতে হলে আমাদের ডিফেন্ডারদের একটি মোটরবাইক লাগবে।’ তাতেও কাজ হতো বলে মনে হয় না। ২৩ বছরের দুরন্ত গতির এমবাপ্পেকে থামায়, সে সাধ্য কার। একটি পরিসংখ্যানে বোঝা যাবে ম্যাচে পিএসজির এই ফরোয়ার্ডের সুস্পষ্ট প্রাধান্য। পোল্যান্ডের বিপক্ষে এমবাপ্পে গোল করেছেন দুটি। অ্যাসিস্ট একটি। ড্রিবলিং করেছেন পাঁচবার। বল ধরেছেন ৬৫ বার। শট নিয়েছেন পাঁচটি। ১৯৮৬-এর পর বিশ্বকাপের নকআউট পর্ব এবারই প্রথম খেলল পূর্ব ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড। শেষ ষোলোতে তারা জায়গা করে নিয়েছিল গোল পার্থক্যে মেক্সিকোর চেয়ে এগিয়ে থাকার সুবাদে।