প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, সফরের সম্ভাব্য নতুন তারিখ শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
, জাপানে কোভিড পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় প্রধানমন্ত্রীর সফর স্থগিত করা হয়েছে। তিন দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে ২৯ নভেম্বর তার জাপান যাওয়ার কথা ছিল। প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করতে অক্টোবর বাংলাদেশে দুদিনের সফরে এসেছিলেন জাপানের সহকারী মন্ত্রী। ২৭ অক্টোবর পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন।
ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সফরকালে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ পর্যায়ে উন্নীত করা হবে।
ওই বৈঠকে উভয়পক্ষ দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সম্পর্ক অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। এতে ২০১৪ সালের মে মাসে শেখ হাসিনার জাপান সফরের বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
জাপান সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘কমপ্রিহেনসিভ পার্টনারশিপ’ পর্যায়ে উন্নীত করেন। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বাংলাদেশ সফর করেন।
ওই সময়ে দুই দেশ ‘বিগ-বি’-এর অধীনে অর্থনৈতিক অংশীদারত্বকে আরও গভীর করার সংকল্প ব্যক্ত করে।
প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর স্থগিতের কারণ হিসাবে দেশটির তিন মন্ত্রীর পদত্যাগ একং করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
তবে সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত জাপানের দিক থেকে নাকি বাংলাদেশের দিক থেকে সে বিষয়ে তিনি খোলাসা করেননি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জোট ইন্ডিয়ান ওশেন রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কারণ দেখান।
তিনি আরও বলেন, জাপানে কোভিড সংক্রমণ এখনো প্রকোপ। সবাইকে কোয়ারেন্টিন করতে হয়। একাধিক বিবেচনায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ওপর অনেকের নজর। বিভিন্ন গ্রুপ এ অঞ্চলে প্রতিবন্ধকতা তৈরির চেষ্টা করছে। এ অঞ্চলের সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও দূষণ রোধে সদস্য দেশগুলো একমত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ড. মোমেন বলেন, কখনো কখনো আমাদের জাহাজে জলদস্যুদের আক্রমণ হয়। অবৈধভাবে মাছ ধরে, কেউ কেউ অতিরিক্ত মাছ আহরণ করে, সম্পদ নিয়ে যায়। অন্যায়ভাবে বা অবৈধভাবে যাতে এসব সম্পদ আহরণ না হয় সে বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করতে আমরা বৈঠকে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি। কোনো দেশ নয় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সময় সময় এসব দুর্ঘটনা ঘটায়। এজন্য আমরা সবাই মিলে প্রশান্ত মহাসাগরকে রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছি।
স্বাগতিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের আইওআরএ’র ২২তম মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে ভারত, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ১৮ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা অংশ নেন। এর আগে বুধবার আইওআরএ সিনিয়র কর্মকর্তাদের দুদিনের বৈঠক শেষ হয়। এর আগে দু’দিনব্যাপী ‘আইওআরএ বিজনেস ফোরাম লিডারশিপ সামিট-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়।