দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় যেতে পারলে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ভিশন বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে ১১টি পরিকল্পনার কথা জাতীয় সংসদকে জানান তিনি। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী তার প্রশ্নে আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা কী হবে তা জানতে চান।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ছিল ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’। সেসময় ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ ও ২১০০ সালের ‘নিরাপদ ব-দ্বীপ’ পরিকল্পনার রূপরেখা প্রদান করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, উন্নত বাংলাদেশের অভিযাত্রায় প্রথম ধাপ হিসেবে ইতোমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় আসীন হয়েছি। বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং মাথাপিছু গড় আয় হবে ৫ হাজার ৯০৬ ডলারের ওপরে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত দেশ, যেখানে মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫০০ ডলারের অধিক।
বর্তমানে বাংলাদেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ উলেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ৫১, ২০৩১ সালে ৯ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।
২০৩১ সালের মধ্যে দেশের চরম দারিদ্র্যের অবসান হবে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্র্য ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হবে। এ জন্য দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের ১১টি সংক্ষিপ্তসার সংসদে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিস্তারিত পরিকল্পনা আগামী নির্বাচনি ইশতেহারের মাধ্যমে যথাযথ সময়ে প্রকাশ করা হবে।
১১ দফা পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে আগামীতে সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগের ভিশন হবে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি হবে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। এ জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
‘রূপকল্প ২০৪১’-কে ধারণ করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দ্বিতীয় পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১, স্মার্ট ডেল্টা বিনির্মাণের ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’, নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২৬-২০৩০, দশম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০৩১-২০৩৫, একাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০৩৬-২০৪০ ইত্যাদি। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন পরিচালনা ও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
ক্ষুদ্র, কুটির, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলা হবে। সড়ক, নৌ, রেল ও বিমানপথে যাতায়াতের গৃহীত সব প্রকল্প শেষ করা হবে বলে জানান তিনি। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে বলে জানান শেখ হাসিনা।