মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
মঙ্গলবার ইসরাইলের কারাগারে খাদের আদনান নামে আমরণ অনশনকারী এক ফিলিস্তিনি বন্দি মারা যান। এর জবাবে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় হামাস ও ইসলামিক জিহাদ গ্রুপ। এর পর এদিন রাতে গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। তবে এ হামলা ও পাল্টা হামলা যেন বড় আকার ধারণ না করে সে জন্য আপাতত যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে তারা। খবর আলজাজিরার।
অন্যদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিসর, কাতার এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় বুধবার রাত ৩টা ৩০ মিনিট থেকে এ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
এ বিষয় বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, তারা ‘গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন’ বন্ধে মিসর, কাতার ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে।
বিবৃতিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি আরও জানিয়েছে, তাদের নেতা ইসমাইল হানিয়ে এ দুটি দেশ এবং জাতিসংঘের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলজাজিরাকে ফিলিস্তিনের একটি সূত্র জানিয়েছে, গাজায় যেন ইসরাইল আর কোনো হামলা না চালায় সেটির আলোচনার ফলই এ যুদ্ধবিরতি। এ ছাড়া আদনানের মৃত্যুর পর ফিলিস্তিনের আরেকটি সশস্ত্র দল ইসলামিক জিহাদ গ্রুপ ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস।
এদিকে মঙ্গলবার ইসরাইলি বন্দিদশায় মারা যান খাদের আদনান। ৯ সন্তানের বাবাকে ১২ বার আটক করেছিল ইসরাইল। ৪৫ বছর বয়সি আদনান তার জীবনের আট বছর কাটিয়েছিলেন কারাগারেই। যে ১২ বার তাকে আটক করা হয়েছিল সেগুলোর প্রায় সবই হয়েছিল কথিত ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভি ডিটেনশন’ আইনের অধীনে।
এই অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন আইনে যাদের আটক করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয় না এবং কোনো বিচার কার্যক্রম চালানো হয় না। তাদের শুধু কারাগারে আটকে রাখা হয়।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ কালো আইনের অধীনে আবারও আদনানকে গ্রেফতার করে ইসরাইলি পুলিশ। এর প্রতিবাদে কয়েক দিন পরই অনশন শুরু করেন তিনি। সব মিলিয়ে ৮৭ দিন অনশন করার পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এ ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মী।
তার মৃত্যুর বিষয়টি সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ক্ষুব্ধ হয়। তারা রাস্তায় নেমে আসে। অন্যদিকে ইসলামিক জিহাদ ও হামাসের মতো সশস্ত্র দলগুলো ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।