শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঁচ দিন পর গুলশানের নিজ বাসভবন ফিরোজায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে পাঁচটায় রাজধানীর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা দেন তিনি। এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গাড়িতে ছিলেন ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিণী শর্মিলা রহমান সিঁথি।
পরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতালে গঠিত মেডিকেল বোর্ড আবারও খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুপারিশ করেছে। নানামুখী জটিলতার কারণে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন, যে সুবিধা আমাদের দেশে নেই। বিদেশে না পাঠানো পর্যন্ত আপাতত উপসর্গ দেখে সাময়িক চিকিৎসা চলছে।’
গত ২৯ এপ্রিল শনিবার খালেদা জিয়াকে রুটিন চেকআপের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
খালেদা জিয়া বাসায় ফেরার আগে থেকেই গুলশানের বাসভবনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, ডা. রফিকুল ইসলাম, সাবেক সাংসদ রেহেনা আক্তার রাণু, শিরিন সুলতানা, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
দুপুরে ডা. জাহিদ বলেন, ‘উনার কিছু অসুস্থতা ছিল, কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। সেজন্য উনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। হাসপাতালের ৭২২৩ নম্বর কেবিনে ভর্তির পরে চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, তাতে তিনি মোটামুটি রেসপন্স করেছেন। এ কারণে তার চিকিৎসায় হাসপাতাল গঠিত চিকিৎসকদের বোর্ড তার বাসায় ফেরার সিদ্ধান্ত দিয়েছে।’
এর আগে গত বছরের জুন মাসে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। শারীরিক অবস্থা ক্রিটিক্যাল থাকায় অন্য দুটি ব্লকে রিং পরানো হয়নি। এখন তার হৃদযন্ত্রের এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়েছে।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, যকৃৎ, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। এরপর থেকে তার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হচ্ছে।