প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রাধাপদ রায় (৮০) নামের স্থানীয় স্বভাবকবি খ্যাত পল্লীকবিকে মারপিটের ঘটনায় মুল আসামী রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে কুড়িগ্রাম পৌর শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম। তিনি বলেন,, মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এবং পারিবারিক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চারন কবি রাধাপদ রায়কে মারধরের ঘটনায় প্রধান আসামী রফিকুল ইসলামকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানোপাটাবো। অপর আসামী কদুর আলীকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, এই বিষয়টি একান্তই ব্যক্তিগত। আপনারা সবাই জানেন এটি পারিবারিক ঘটনা। কেউ কেউ এটিকে অন্যভাবে প্রচারনাও চালিয়েছে। ভুয়া তথ্য না ছড়ানোর জন্য সবাইকে বিনতি অনুরোধ করছি। আমরা কবিকে দেখাশোনা করছি তার
ছেলে মেয়ে আমাদেরকে বলেছে বিষয়টি পারিবারিক। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকালে রাধাপদ রায়ের নিজ গ্রামে এ হামলার ঘটনাটি ঘটে। পল্লীকবি রাধাপদ রায় নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের গোড্ডারপাড় বটতলা গ্রামের বাসিন্দা। ওইদিন চিকিৎসার জন্য কবিকে নেয়া হয় নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে।
এ ঘটনায় রাধাপদ রায়ের ছেলে শ্রী জুগল রায় পরদিন রোববার অভিযুক্তদের বির“দ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা ও এজাহার সুত্রে জানা গেছে, ৭ মাস আগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত ভাবে পথরোধ করে গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে চারন কবি রাধাপদ রায়কে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মোঃ রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলী নামের দুই ভাই। অভিযুক্তরা একই ইউনিয়নের কচুয়ারপাড় এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলী দুই ছেলে। অপরদিকে গত ৪ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসারত পল্লীকবি এখন অনেকটা সুস্থ আছেন। উল্লেখ্য, রাধাপদ রায় জীবনে বেশিদুর পড়ালেখা করতে পারেননি। পড়েছেন মাত্র
পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত। নিজের লেখা গান,কবিতা মানুষকে শুনিয়ে সামান্য উপার্জনে চলে তার সংসার। আঞ্চলিক ভাষায় তার লেখা গান ও কবিতাগুলো বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইতিমধ্যে তার লেখা কবিতা “কেয়ামতের আলামত
জানি কিন্তু মানি না”। শিরোনামে কবিতাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত রাধাপদ সরকারের নিজের লেখা আঞ্চলিক ভাষায় শতাধিক গান ও কবিতা রয়েছে।